Saturday, July 25, 2015

অর্কের মুখটা ইদানিং আমার আর ঠিক করে মনে পড়েনা। অর্ক কোথায় আছে কেমন আছে কিছুই জানা হয়না আর আগেরমত। অথচ একটা সময় কি অদ্ভুত ছিলো-ওর সাথে একদিন কথা না হলেই মনে হতো নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে বুঝি কথা হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রচন্ড অস্থিরতায় ভুগতাম আর ফাইনালি যখন কথা হতো তখন বুঝতে পারতাম চরম উত্তেজনায় কাপছে বুকের ভিতরটা। ওর ছোট্ট মেসেজগুলো অদ্ভুত ভালো লাগার জন্ম দিতো আমার ভিতর, ওকে নিয়ে কেমন যেন ঘোর লাগা নেশা কাজ করতো আমার মাঝে -ওকে ভাবতে ভাবতে কিভাবে সময় কাটিয়ে দিতাম নিজেও জানিনা।
শুধু জানতাম আমার সবটা জুড়ে অর্কের আনাগোনা ছিল। আমার সব অনুভুতিগুলো ও একাই কন্ট্রোল করতো। ও একটু প্রশংসা মনে হতো সাত আসমান ফুড়ে উপরে উঠে যাই। কি ছেলেমানুষই না ছিলাম তখন!
কতবার যে মনে হয়েছে “ইশ কোনভাবে যদি ওর হার্টটা খুলে মনের ভিতরটা বুঝতে দেখতে পারতাম। তখনো বুঝতে পারিনি আমাকে নিয়ে অর্কের অনুভুতি, এখনো জানিনা ও কি সত্যিই কখনো ভালোবেসেছিলো আমাকে। ভালোবাসলে কি এত সহজে ছেড়ে চলে যাওয়া যায় !
ছোট থেকেই আমি ভিষণ নারীবাদী। সব কিছুতেই আমার ছেলেমেয়েদের সমান অধিকার বলে তর্ক করার অভ্যাস ছিলো। পুরুষবাদী সমাজের নানা দিক দেখিয়ে প্রায়ই ঝগড়া শুরু করতাম ওর সাথে, ও মুচকি হেসে আমার সব যুক্তি মেনে নিতো। রাগ করে বলতাম “তোরা সব পুরুষ একি পালের ভেড়া, ও হ্যা হাসতে হাসতে বলতো হ্যা আর তুই হলি আমার একমাত্র ভেড়ি। বোকাটা ঝগড়াও করতে জানতো না ।
মা কোথাও গেলেই হাসি হাসি মুখ করে চলে আসতো “কিরে ভেড়ি রান্না কিছু করেছিস? চা খাওয়াবি না?! বলে নিজেই কিচেনে গিয়ে চা বানিয়ে নিতো।
মাঝে মাঝে “কিরে আন্টিতো দেখছি কিচ্ছু রান্না করেন নি, খাবি কি তুই”! বলে নিজেই রান্না চড়িয়ে দিতো। আমি কিচেনের দরজায় দাড়িয়ে ওর কান্ড দেখে দেখে খুব হাসতাম। খেতে বসলেই শুরু হতো ওর “এই খুব মজা হয়েছে না রে? এরকম রান্না আর জীবনে খেয়েছিস?” আমি হাসতে হাসতে বলতাম হ্যা রে দারুন হয়েছে তোর বউ খুব খুশী হবে। ও তখন বলোতো “আমার বউতো হবি তুই’। আমাকে বিয়ে করলে এমন রান্না সারাজীবন খেতে পারবি। কি রাজীতো? ”
আমি শুনেই মুখ বাকাতাম, ও সাথে সাথে বলতো “অবশ্য আমি বিয়ে বিয়ে না করলে তোকে বিয়ে করবেই বা কে! চেহারার ছিরিচাদ নেই,তার উপর রান্নাবান্নাও জানিস না কিছু ।
আমি ভীষণ রাগ করে বলতাম, যাহ ! আমি বিয়েই করবো না। ও সাথে সাথে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়তো ” এই আমার কি হবেরে !! আমিতো বিয়ের আগেই বিধবা হয়ে গেলাম। ওর চেহারা দেখে আমি হাসতে হাসতে বলতাম ঠিক আছে! কি আর করা, সমাজ সেবা হিসেবেই নাহয় আমি তোর গলায় মালা ঝুলাবো।
অর্কের আকাশ কখনোই খুব একটা পছন্দের ছিলোনা। আমার আকাশ ভালো লাগতো বলে প্রায়ই বলতো ‘একটু ছুতে না পারলে এ কেমন ভালোলাগা রে ?! আমারতো বৃষ্টি প্রিয় । বৃষ্টিতে মাখামাখি করার মজাই অন্যরকম “। তারপর আমার দিকে ঝুকে ফিসফিস করে বলতো ” তুই আমার বৃষ্টি হবি ? ভালোবাসায় মাখামাখি করে রাখবিতো আমাকে ?” কথাগুলো বলার সময় অদ্ভুত ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে থাকতো আমার দিকে । নিজের বুকের ভিতর ঢিপঢিপ শব্দ স্পষ্ট হয়ে কানে লাগতো আমার, ইচ্ছে হতো সব ভুলে ওর মাথাটা বুকের ভেতর চেপে ধরে রাখি ।
আমি শুধু অর্ককে চাইতাম, আমার সবকিছু দিয়ে শুধুই ওকে পেতে চেয়েছি আমি। ভেবেছিলাম বিয়ের পরদিনই মজার মজার সব রান্না করে চমকে দেবো ওকে, বলবো কিরে কি মনে হয় আমিও পারিতো ? অর্কের জন্য আমার ভালোবাসা ছিলো মাতাল ঝড়ের মতো, আমি শুধু এক একটি করে দিন গুনতাম। মনপ্রাণ দিয়ে ওর বউ হবার কামনা করতাম। অর্ক জানতো আমার ওর জন্য জমিয়ে রাখা উন্মাদ ভালোবাসার কথা । ও প্রায়ই আমাকে বলতো” এমন করে তাকিয়ে আছিস কেন ? পাগল হয়ে যাবোতো। আমি পাগল হয়ে গেলে পরে লোকে বলবে তোর বর পাগল।
অর্ক পাগল হয়নি, আমাকে পাগল করে দিয়ে চলে গেছে। ওর প্রিয় বৃষ্টির দিনেই সব ছেড়ে চলে গেছে ও অনেকদুর। ফেলে গেছে আমাকে ভীষন একলা এই ভুবনটায়।
কেন অর্ক ! কেন ? তোরতো আকাশ প্রিয় ছিল না, তবুও কেন তুই আমার জন্য আকাশই হয়ে গেলি ! আমার চারপাশটায় এখন নীল আকাশ, চার পাশটাই তুই – সারাক্ষণ দেখতে পাই শুধু ছুতে পারি না । তুই নেই তবুও কেন আমার সারা শরীরে যন্ত্রণা হয়ে তুই বেচে থাকিস ?! তোকে ছাড়া আমার যে সব শুন্য, সবকিছুই আধার । আমিতো শুধু তোর লক্ষী বউ হতে চেয়েছিলাম, জীবনে আর কিচ্ছু চাই নি -তবুও কেন চলে গেলি অর্ক ?
কেমন আছিস তুই আমাকে ছাড়া ?
ভুল করে প্রজাপতিটা এসে বসতেই ঘাসফুলটার ভীষণ অহংকার হতে থাকে। প্রজাপতির রং নিজের ভেবে একলাই গুনগুনিয়ে উঠে সতেক তেরো গান।
প্রজাপতিটাও অবাক হয়ে সে গান শুনতে থাকে। ঘাসফুলের গানে কোন সুর ছিলোনা ; শুধু শুন্য কিছু বিষাদ। নিজের অজান্তেই পাখার রং ছিটিয়ে আদর মেশায় ঘাসফুলের জলে।
ঘাসফুল সে আদর ভালোবাসা ভেবে ভুল করে, আবারো ভীষণ মায়া নিয়ে গাইতে থাকে একসাথে জীবন কাটানোর স্বপ্ন আর ফেলে আসা একাকীত্ব নীড়।
শেষটায় রংধুনু মুঠোয় রাখা প্রজাপতির ঘাসফুলে বেধে রাখা সাধ্যি কার! প্রজাপতি উড়াল দেয়। উড়ে যায় একফুল ছেড়ে অন্য ফুলে। ঘাসফুল করুণ চোখে চেয়ে থেকে ফিরে আসার প্রার্থনায় ; ফিরে না প্রজাপতি। ঘাসফুলটার দেখা হয় নতুন প্রজাপতির সাথে।
ঘাসফুল ফিরিয়ে দেয় ; বুকের মধ্যে আসন গাড়া পুরনো প্রজাপতিই তার চাই। ধুসর হয়ে আসা পুরনো অপেক্ষা, রংধনুর মাঝে তার ছায়া। ঘাসফুলটা শিখে ফেলে - আসলে জীবন একলাই কাটাতে হয় ;একাকীত্ব কখনো পুরায়না। প্রজাপতিরাও ফিরে না।
প্রতিশ্রুতিরাও ভুলে যায় পুরনো দিনের কথা।
বিরান পথে একলা হেটে যাই, হঠাৎ করেই মরুভুমির মাঝে গজিয়ে উঠা ক্যাক্টাসের বেগুনী ফুল দেখে মনে হয় তোমাকে বড় দরকার।
কতদুর তুমি; তোমাকে ভাবতেই ছুয়ে দেয়ার তৃষ্ণাটা বেড়েই যায়।
ঘুম ভেংগে চায়ের কাপটা হাতে নিতেই মনে হয় এই মূহুর্তে তোমাকে প্রয়োজন প্রয়োজন ছিলো। অন্তহীন পথের যাত্রায় ক্ষয়ে যাওয়া জুতো জোড়া হাতে তুলে সমুদ্র জলে পা ডুবাই। চারপাশে সব হাসিখুশী প্রাণের মেলা আমার সব মুগ্ধতায় তোমাকে প্রয়োজনের চেয়েও বেশী করে চাই।
তুমি দুর প্রবাসে ; তোমাকে বড় দরকার .....
দেখা হবে হবে করেও আমাদের আজো দেখা হয়নি অথচ ঘুমালেই তোমার দুটি হাত জড়িয়ে থাকার স্বপ্নটা তাড়া বেড়ায়। দেখা হয়নি কখনো তারপরো স্বপ্নের মাঝে তোমার সাথে কাটানো মুহুর্তগুলো স্থির ছবি হয়ে ভেসে থাকে।
চোখ ভরতি জলে ঘুম ভাংগে প্রতি প্রভাতেই। রাত জেগে টিভি দেখা আর অফিসের শত ব্যাস্ততার ভিড়ে আগোচরে চোখের জল লুকোনোর মুহুর্ত।
রাতের পর রাত আমি জেগে থাকি তুমিহীনতার অস্থিরতায়। হাজার মাইল দুরুত্বে তোমার কন্ঠ ভেসে আসে মিনিট সেকেন্ড অথবা আধ মূহুর্তের জন্য। আজন্ম তৃষ্ণা আমার বেড়েই চলে।
মুঠোফোনে কথা বললেই কি কষ্টগুলো দুরে সরে!
কষ্টগুলো হারায় না, রাতের অন্ধকারের কালো মেঘেও কষ্টগুলো চুপটি করে পালিয়ে থাকে। ভালোবাসাগুলো নির্জিব তোমাকে ছাড়া। তাইতো খুজে বেড়াই পথের পর পথ হারিয়ে।

সত্যি মিথ্যে তুমি আমি

আকাশ ছোয়া কাব্য তুমি
পাথর ছোয়া ফুল
তন্দ্রা ক্ষয়ে রূপোর কাঠি
নেশা ধরা ভুল ।
নীলছে পাতায় তোমায় আকি
এলোমেলো চুল ,
চন্দ্রিমাতে সমুদ্র স্লান
ফিরিয়ে নিও ফুল ।
অলীক আমার মিথ্যেপূরী
বিভ্রমেতে ভরা
সত্য রাজ্যের পায়রাগুলো
জন্ম থেকেই মরা ।
নিজের ভিতর তোমায় খুজি
লক্ষ জনম চুড়া
সত্য খুজি, মিথ্যে খুজি
আকাশ ভরা তারা ....

The crushing sound of my heart made me realize once again,I am not over it. I still love him... His pain is killing me,. How can i calm h...