Wednesday, August 19, 2015

বিয়ের বছর দুয়েক হয়ে এলো প্রায়, তাও শাহেদের সাথে তেমন কোন ঘনিষ্ঠতা আমার হয়নি। 
ভুল বললাম, ঘনিষ্ঠতা দূরে থাক, সৌজন্যততার খাতিরেও আমরা একজন অন্যজনের সাথে কথা বলিনা। 
দোষটা আমারই। সেই ছোটবেলা থেকে আমি বড় হয়েছি প্রচন্ড ছেলেভীতি নিয়ে। বাবা আমার মত না নিয়েই বিয়ের কথা পাকা করে ফেললেন। আমি যখন বললাম কিছুতেই না, আমি বিয়ে করতে চাইনা বাবা। বাবা বললেন আমি মরে গেলে শান্তি পাবি তুই, আর কথা বাড়াইনি। চুপচাপ মেনে নিলাম বাবার কথা।
বিয়ের রাতে ভয়ে অস্থির হয়ে আছি, শাহেদ রুমে ঢুকতেই কর্নারে লুকিয়ে কাঁদতে শুরু করলাম। ও কি ভাবলো জানিনা, তবে আমার কাছে আসার চেষ্ঠা করেনি ও আর। 
সত্যি বলতে আমার ধারণাই ছিলোনা কোন ছেলে এমন হয়, আমি ভেবেছি পুরুষ যখন নিশ্চয় একদিন না একদিন ঝাপিয়ে পড়বে আমার উপর। কোন বাধা শুনবেনা আমার, কিন্তু না একদিন দুদিন করে মাস পেরিয়ে গেলো।
আমি আমার মতো বাস করছি, শাহেদ তারমতো। ঘরে থেকে থেকে বিরক্তি চলে এলো। আপুকে বলে তার অফিসেই একটা জব নিয়ে নিলাম । সময় কাটাতে আর আগের মতো সমস্যা হয়না । ঘরে ফিরতেই দিন পুরিয়ে যায় ।
কেমন করে যেন বছর খানেক কেটে গেল এর মাঝেই শেষ, এর ভিতর শাহেদের সাথে আমার কথা হয়েছে বড়জোর দু কি তিনদিন। নিজের ভিতরটা বদলে যাচ্ছে স্পষ্ট বুঝতে পারছি - অফিস থেকে ফিরে নিজের অজান্তেই কান পেতে থাকি শাহেদ ফিরেছে কিনা বুঝতে। কথা বলার সুযোগ খুজতে থাকি, কিচ্ছু মাথায় আসেনা। সেই পুরনো জড়তা আকড়ে ধরে চারপাশ থেকে ।
একদিন সুযোগটা হঠাৎ করেই এলো। পার্স হারিয়ে ফেললাম ফেরার পথে। খুব সাহস করে টাকা চাইলাম শাহেদের কাছে। কিন্তু ওটা ভুল ছিলো আমার, বেচারার চেহারা রক্তশূন্য হয়ে গেলো সাথে সাথে। টাকা নেই ওর হাতে বুঝতে একদম অসুবিধে হয়নি আমার। কি বলে এড়ানো যায় ভাবছি,কিন্তু এই গাধা ব্রেনে কিচ্ছু এলোনা । ও আমার কাছে এখন নেই বলতেই চুপচাপ নিজের রুমে ফিরে এলাম।
তারপর থেকেই প্রায়ই দেখি শাহেদ আমার সামনে মানিব্যাগ থেকে টাকা নিয়ে গুনছে। এত্তো মায়া লাগে, প্রায়ই মনে হয় গিয়ে বলি আমার কিছু টাকা লাগবে দাওতো। কিন্তু জড়তা কাটিয়ে আর বলা হয়ে উঠেনা।
শাহেদ জানেনা এই চারবছরের কত বদলে গেছি আমি, ওর একটু ছোয়া পেতে উম্মুখ হয়ে থাকি সারাক্ষণই। ওর ছুয়ে যাওয়া গ্লাস প্লেটগুলো ছুয়ে দিতে যে কি ভীষণ সুখ কি করে বুঝাই! এই অনুভুতিগুলো একদম নতুন, অস্থির হয়ে থাকি সারাক্ষণ । ও কার সাথে কথা বলছে কি বলছে সব খেয়াল করি, এত্তো হিংসে হয় আশেপাশের সবাইকে ।
আর না এই এনিভারসারিতে আমি অবশ্যই ওকে বলবো আমার ভালোলাগার কথা,ভালোবাসার কথা। কাছে আসার ইচ্ছের কথা । জড়তা কাটিয়ে ভালোবাসী ঠিক জানাবো ।

No comments:

Post a Comment

The crushing sound of my heart made me realize once again,I am not over it. I still love him... His pain is killing me,. How can i calm h...