Tuesday, June 20, 2017

অর্ককে নিয়ে আমার গল্পটা দুঃখের, অনেকগুলো রঙের...

সেবার ক্লাসে এক ছেলেকে নাম্বার দিয়েছিলাম বলে ওর সেকি রাগ। ওর রাগটাও ছিল ভালবাসার মত ভীষণ তীব্র। আমার যে লম্বা চুল ওর সবচেয়ে প্রিয় ছিলো, সেটাই কাটতে চাইলো । সব কেটেছে যে তা কিন্তু না, একটু কাচি লাগাতেই ওর চোখ ভর্তি জল। (পরে জেনেছিলাম ছেলেটার আমার প্রতি ইন্টারেস্ট ছিল বলেই অর্ক এত ক্ষেপেছিল)

ওর রাগ পড়ে গেল, কিন্তু আমার রাগের তখন মাত্র শুরু।  এর পরের এক সপ্তাহ ওর সাথে কথা বলাতো দূর থাকুক ওর চেহারা দেখতেও রাজী ছিলাম না আমি। কিন্তু সত্যি বলতে কি রাত হলেই আমার ভীষণ কষ্ট হতো। ওকে একবার দেখার অদম্য ইচ্ছেটা ভয়াবহ কষ্টে চেপে রাখতাম। শুধু মনে হতো আমরা দুজন বুঝি পৃথিবীর দু প্রান্তের মানুষ হয়ে গেছি।
এক সপ্তাহ পর দেখি অর্ক ন্যাড়া মাথায় বাসার সামনে ঘুরঘুর করছে। ওকে কাছ থেকে একবার দেখার ইচ্ছেটা কিছুটেই চেপে রাখতে পারলাম না। খুব যত্ন করে চোখে কাজল দিলাম, কালো পাড়ের সাদা শাড়ির প্রতিটা কুচিই গুণে গুণে বসালাম। ব্যাগটা কাধে ঝুলিয়ে গেটের বাইরে রাখতেই অর্ক ছুটে এসে হাত চেপে ধরলো। বললো দেখ তোর চুলে কাচি ছোয়ানোর শাস্তি আমি নিজেই নিজেকে দিয়েছি। তুই আমার দিকে তাকা, আর একদিন এমন থাকতে হলে আমি কিন্তু মরে যাবো বলছি। সত্যি বলছি আমি মরে যাবো।

জল ছলছল চোখে আমি মুখ তুলতেই অর্ক আমার হাত ধরে ঝরঝর করে কাঁদতে লাগলো। এই পাগলকে নিয়ে আমি কোথায় যাবো?!  আমার চোখে একটু জল দেখলেই অর্ক পাগল হয়ে উঠতো। আমি শুধু ভাবছিলাম আমার কিছু হলে পাগলটাকে দেখবে কে! কেমন করে বাচবে ও? আমার কিছু হয়নি। আমি দিব্যি বেচে আছি, শুধু ও নেই কোথাও। অর্ককে ছাড়া আমি বেচে আছি, কতগুলো দিন, কতগুলো বছর। কেমন করে মানুষ নিজের আত্মা ছাড়া বেচে থাকে নিজেকে না দেখলে কখনোই বুঝতে পারতাম না আমি।

অর্ক আমার অর্ক...  অর্ককে নিয়ে লিখতে গেলে হাজারো গল্প হাহাকার  হয়ে আমার সামনে ভেসে থাকে। চলে যাওয়ার এতগুলো দিন পরও আমার সবটা জুড়ে শুধু অর্কই বাঁচে।

No comments:

Post a Comment

The crushing sound of my heart made me realize once again,I am not over it. I still love him... His pain is killing me,. How can i calm h...