Sunday, September 8, 2013

অতি প্রাকৃতঃ

কিছু কিছু অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতা হয়তো আমাদের সবারি আছে । আমি যখন দেশে গেলাম তখন নানা কাহিনী শুনেছি, কে জানে আসলেই কতটুকু সত্যি আর মিথ্যে। বাসার পাশে একটা তুলা গাছ ছিল অনেকেই নাকি সেই তুলা গাছে সাদা কাপড় পরা কোন মেয়েকে বসে থাকতে দেখেছে। শুধু তাই না আমাদের বাসায়ও নাকি ভুত দেখা যেত। ভাড়া থাকতেন যারা তারা মাঝেমাঝেই কম্প্লেইন করতেন ভুতের ব্যাপারে। ভুত নাকি ছাদে উঠে নাচানাচি করে  আমি অবশ্য অনেক রাত পর্যন্ত একা ছাদে বসে থাকতাম, কিন্তু ছাদে কখনো কিছু দেখিনি ।

আমার ভুতের অভিজ্ঞতা বলতে আমি যখন রাতে ঘরে একা ঘুমাচ্ছিলাম হঠাৎ করেই মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে যায়, ভাঙার পর আমি পানি খেতে উঠলাম রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছি, বাইরে থেকে শুনতে পাচ্ছি ভিতরে কেউ আম্মুর সেলাই মেশিনে কাপড় সেলাই করছে। অথচ আমার আম্মু তখন কুয়েতে, পুরো বাসায় একদম কেউ নেই, আম্মুর রুমের দরজা তালাবন্ধ। ভয়ে দৌড় দিয়ে রুমে চলে আসলাম, এসে দুইচোখ টাইট করে বন্ধ করে শুয়ে আছি- কি মনে হতেই একটু খুললাম সাথে সাথে মনে হলো রুমের দরজায় দোয়াটে লম্বা ঝুল জুব্বা পরা দাঁড়িয়ে আছে। ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম তখন। এরপর থেকে পানির বোতল খাটের পাশেই থাকে আমি যেখানেই থাকিনা কেন।
আরেকবার ঘুম ভাঙার পর মনে হলো আমার রুমের মেঝেতে অনেক লম্বা কেউ নামাজ পড়ছে। ভয়ে কম্বল দিয়ে মুখ ঢেকে সারারাত শুয়ে ছিলাম।

একবার আপু ছুটিতে বেড়াতে আসলেন দুবোন কি নিয়ে যেন ঝগড়া করলাম- তারপর আমি ঘুমাচ্ছি ফ্লোরে রাগ করে আর আপু সোফায় শুয়ে আছেন একটু পর আপু এসে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বললেন আমি নাকি খেজুর গাছেরপাতার কান্ড দিয়ে উনার গায়ে গুতা দিয়েছি আমি ঘুম অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি, খেজুর গাছের পাতার কান্ড কোথায় পাবো তাও বুঝলাম না। আপু বললেন আপু ঠিকি ফিল করতে পেরেছেন খসখসে পাতার কান্ড দিয়ে খোচা দেয়াআমার কাজ ছিল, বাসায় আর কেউ নাই সো আর কেউ করার প্রশ্নই আসেনা  অথচ আমি বেচারী ঘুম থেকেই জাগিনাই 

আরেকটা কাহিনী শুনেছিলাম মাস্টার দাদার কাছ থেকে- দাদা নাকি একরাতে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর দেখতে পেলেন কেউ একজন রুমে হাটাহাটি করছে। ইংরেজ মহিলাদের মত হাই হিল পর ঠুকঠুক করে হাটা। দাদা তাই ইংলিশে জিজ্ঞেস করলেন কয়েকবার হু আর ইউ,হু আর ইউ? কিন্তু কোন জবাব আসেনা তাই দাদা ভয় পেয়ে দোয়া দরুদ যখন পড়ছিলেন তখন দেখেন যে অদৃশ্য হয়ে গেছে। দাদা যে রুমটাতে থাকতেন তার পাশের রুমের জানালা আমরা প্রতিরাতে বন্ধ করে ঘুমালেও সকালে উঠে দেখতাম ঠিকি খোলা। কতযে আলোচনা করতাম সেই সময়টায় সবাই মিলে এসব নিয়ে।

মেয়েদের হোস্টেলে জীন থাকার কথা প্রায় শুনতাম, কি জানি আসলেই থাকতো কিনা তবে মনে হয় এসব শুনার কারণেই জীবনের প্রথম হোস্টেলে রাতে ঘুম ভাঙলে আমি আমার পাশে কেউ দাঁড়িয়ে আছে এমন ফিল করতাম। একরাতেতো মনে হয়েছে কিছু দেখেছি, ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার অবস্থা। সকালে উঠে যখন রুমমেটদের বলার পর শুনলাম ওরাও নাকি এমন দেখে। কিন্তু এরপরের আর কোন হোস্টেলে আমার এমন ফিল হয়নি ।

জীনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের বিল্ডিংয়ের চার পাশে বেশকয়েকবার বোতল গেড়ে দেয়া হয়েছিল। আমার এখনো কানে ভেসে আসে বিল্ডিং এর চার কর্নার থেকে আজান দিচ্ছে বোতল গেড়ে দেয়ার সময় আমরা সবাই ঘরে বসে দোয়া দরুদ পড়ছি। সেই সময়টায় কিছু খাওয়াটা নিষিদ্ধ ছিল, শেষ হওয়া পরযন্ত অপেক্ষা করতে হতো কিছু খেতে হলে। তবে খুব অবাক ব্যাপার হলো বোতল গেড়ে দেয়ার পর এসব ব্যাপার অনেক শান্ত হয়ে যেত, এটাকি আসলে বোতলের কারনে না ব্যাপারটা পুরোটাই আমাদের মাইন্ডের খেলা ছিল আজো বুঝতে পারিনা।

No comments:

Post a Comment

The crushing sound of my heart made me realize once again,I am not over it. I still love him... His pain is killing me,. How can i calm h...