অন্ধকার ঘরে প্রজাপতি উড়ে । প্রজাপতিগুলো ফিসফিস করে বলে "তুমি না এলেই বা কি এসে যায় বলো"! অতীত কি বদলানো যায় ! অতীততো বদলায় না- শুধু রঙ গন্ধহীন অতীতের সব পৃষ্ঠাগুলো একেরপর এক উলটে যায়।
একবছর আগে ঠিক এই দিনটাতেই ছেলেটা মেয়েটাকে কল করেছিলো । ফোন হাতে হতভম্ব মেয়েটা জীবনে প্রথমবারের মতো নিজের হার্টবিট বন্ধ হওয়ার অনুভুতিটা আবিষ্কার করে। চারপাশের পৃথিবী থমকে যায়, চোখ বন্ধ করে মেয়েটা শুধু ছেলেটার কন্ঠে উচ্চারিত শব্দগুলোই অনুভব করতে থাকে। শুনতে পাওয়া বাক্যগুলো বারবার শুনতে চাওয়ার আশায় মিথ্যে করে "শুনতে পাচ্ছিনাতো" শব্দটা বলেই যায় ।
ছেলেটা বলা কথাগুলো আবারো আবারো বলেই যায় আর মেয়েটা চুপটি শুনতে থাকে । উত্তেজনায় হৃদয়টা খাচা থেকে বের হয়ে আসার ভয়েই বুঝি লাল বাটনটা টিপে দেয় মেয়েটা ।দু'হাতে মোবাইলটা বুকের কাছে মিশিয়ে দেয়ার ব্যর্থ প্রচেষ্টা । পৃথিবীর রঙগুলো বদলে যেতে থাকে মেয়েটার কাছে। মেয়েটার কাছে জীবনের অর্থ ছেলেটাই হয়ে উঠে । এতদিনের পুরনো পৃথিবীটা কেমন অচেনা হয়ে যায়, শুদ্ধ অশুদ্ধ সব ভুলে আয়নার ওপাশটায় পরিচিত পুরনো জগত রক্তের বন্ধন। আর এপাশটায় শুধু ছেলেটাকে জড়িয়ে মেয়েটা।
অনাকাঙ্ক্ষিত আবেগের প্রবল তোড়ে দিশেহারা মেয়েটা বিস্ফোরিত চোখে এতদিনের যত্নে গড়া জগতটাকে উলোট পালোট হয়ে যেতে দেখে। ভাঙ্গতে থাকে মেয়েটাও নিজের ভিতর অচেনা ঝড়ে। ভয়ে কাতর মেয়েটা ছেলেটার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় "এসো আমরা আয়নার ওপাশের জগতটা ছুয়ে দেই। মিলিয়ে দেই দু'জগতের মাঝখানের ব্যাবধানটুকু।" কিন্তু ছেলেটা মুখ ফিরিয়ে নেয় ।
সেদিন থেকেই মেয়েটা একটু একটু করে মরে যেতে থাকে। অদৃশ্য হতে থাকে অবাক কোন বিষাদে ।কাচের জগতটা ভেঙ্গে যায়। মিলিয়ে যায় মেয়েটা শূন্যে ।
তার ঠিক একবছর পর "মেয়েটা ফিরে আসে হঠাৎ করেই। আবারো আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েটা। অদ্ভুত ভাগ্যের খেলা- এবার আয়নার ওপাশটায় ছেলেটাকে দেখা যায়। মেয়েটা হাত বাড়ায় ছুয়ে দিতে কিন্তু কেন যেন ছুয়ে না দিয়ে ফিরিয়ে নেয়।তার বদলে ছুয়ে দেয় নিজের গাল, আঙুলের ডগায় অশ্রুজল।ক্ষণিকের জন্য ফিরে আসা মেয়েটা আবারো অদৃশ্য হয়ে যায়।
No comments:
Post a Comment