Monday, December 21, 2015

মাঝে মাঝে হঠাত করেই দিনগুলো অদ্ভুত ছায়াময় হয়ে যায়, ঘোর লাগা নিস্তব্ধতায় চারদিক ছায়া ছায়া...
সময়গুলো বরাবরই মন খারাপের ছোয়া, অদ্ভুত ভালো না লাগা ঘিরে থাকে সারাক্ষণ। চোখের পলক থেকে হৃদয় পর্যন্ত স্যাতস্যতে অনুভুতি...
ভালো লাগেনা কিছুই আর, আংগুলের গোড়ায় পুরনো স্মৃতি।
শীতকাল আমার কখনোই ভালো লাগেনি। অভদ্র লাগে মন খারাপ স্মৃতিগুলোও- দুজন একসাথে হাল ছেড়ে দিলেই সম্পর্কের সুতোটা আপনিই ছিড়ে যায়...
তোমার ফিরে যাওয়ার গল্প আর নতুন স্বপ্ন দেখার গল্পগুলো তুমি একের পর এক বলে যাও- তোমার চোখের তারায় জোছনার ছায়া...
 আমি প্রাণপনে হাসার চেষ্টা করি-ঠোট বেকে যায় আটকে রাখা কান্নার দমকে...
গল্প শেষে তুমি ফিরে যাও...

আমি নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকি,তোমার ছায়া মিলিয়ে গেলেই ভাঙা স্বরে ভালোবাসী বলার চেষ্টা...

রোজ রোজ আমার একি স্বপ্ন, সেই একি জোছনায় আমি আটকে থাকি রাতের পর রাত... স্বপ্নটা শেষ হয় ঠিক একি ভাবে...

জোছনার বিভ্রমে অনুভুতি লুকানোর আকাঙ্ক্ষায় ঠোট কামড়ে ধরি...
চোখের পাতায় জমা হওয়া অশ্রুগুলো আটকে রাখার চেষ্টায় নীল হয়ে আসে চেহারা...
চাদের আলোয় তোমার ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে আসে।

আমার ভাঙা স্বর ভা...লো....বা....সী....

মাঝে মাঝে গল্পহীন বিকেলগুলো হঠাৎই গাঢ় সবুজ কোন বন হয়ে যায় ....
ওখানে পাখি উড়ে  শব্দহীন কিচির মিচিরে নদীর দু কুল ছাপিয়ে জল ভাঙে। নিঃসঙ্গ মেয়েটা ক্লান্তিহীন বাদামী কান্ডের গোলক ধাধায় পথ হারাতে থাকে...

তারপর হঠাৎ করেই বনটা বিশাল কোন সমুদ্রতল হয়ে উঠে...
সেই সমুদ্রে বেগুনী ঝোপ, ছোট ছোট রংবেরঙ এর মাছ...  আবারো ভেসে বেড়ায় একলা মেয়েটা।  সমুদ্রের লতাগুল্ম হাত বাড়িয়ে ডাকে- আয় মেয়ে আয়।


মেয়েটা চোখে মুখে ভীষণ ব্যাস্ততা একে নিয়ে জানায় "আজ না- আজ আমার কিছুতেই সময় হবেনা।
টকটকে লাল ওই সূর্যটা সমুদ্রে ডুব দিলেই টুক করে ধরে ফেলবো। তারপর এক পৃথিবী সমুদ্র হয়ে ভাসিয়ে নেবো সব।

Sunday, December 20, 2015



তোমায় ভেবে কাব্যগুলো তারার ফুল হয়ে ঝরুক, বৃষ্টিভেজা আকাশ জুড়ে এক সমুদ্র জোছনা থাকুক;
তোমার আমার গল্প হঠাৎ অচীন সুরের ছবি আকুক ;

আমার প্রথম তোমার প্রথম মেঘলা আকাশ কাব্য দুপুর একসাথে থাক-অস্থিরতায়, মাতাল স্বপ্ন-আলোর নাচন সুখের ঘোরে খেই হারাক;

অল্প কিছু শব্দ বেছে নীল চিঠি আজ খামে পড়ুক, বসন্ত আর শরৎ আকাশ অস্থির এক ঝড় ডাকুক;

একলা পাখি-আমার পাখি
সব ভুলে আজ ছুটে আসুক।

Thursday, October 15, 2015

whether its ignoring me/avoiding me or pretending not to see me... everything is fine as long as u stay within my sight..
I can accept everything as long as I can see u, but plz don't disappear from my sight.. 
don't go to a place where I can't see u anymore..
My world stops,I can't breath-
I am unable to live in a world without u..
প্রিয় আকাশ।
তোমাকে লিখার মতো বাকী আছে কিছু ভাবিনি, তবে তোমাকে বলার মতো প্রচুর জমে আছে জানি। আমার অনুভুতিগুলোতো তুমি বরাবরই জানতে। আমার ইন্সিকিউরিটি, আমার অপূর্ণতা, আমার রেস্পন্সিবিলিটি আর আমার তুমি।
তোমার সাথে কথা বলতে আমার প্রতিবারই ভয় হয় বিশ্বাস করো। শপথটা ছিলো তোমাকে ছেড়ে থাকার অথচ তোমার একটা কথাতেই আমি সেই সাধারণ ইন্সিকিউর মেয়েটা হয়ে যাই। সব কিছু ভুলে আমারো চোখের পাতায় ছোট্ট একটা সংসার বাধার স্বপ্ন আবার জায়গা করে। লাল জুতা পরা ছোট্ট একটা মেয়ে - ওই মেয়েটা তোমার আমার মেয়ে। তুমি বাসায় ফিরেই মেয়েকে জড়িয়ে নিয়েছ আর অভিমানে আমার ঠোট ফুলে আসছে। একটু একটু করে জল জমে চোখের কোণে, দায়িত্ব বোধগুলো ভেস্তে যায়।
কিন্তু বিশ্বাস করো আমার এমন হওয়ার কথা ছিলো না। আমার কিন্তু ঠিকই পাথর হওয়ার কথা ছিলো। তবুও তুমি এক সমুদ্র জল হয়ে হঠাৎ হঠাৎ আমায় ভাসিয়ে নাও। তারপরেই শুরু হয় আবার অপেক্ষার পালা। আমি অস্থির হয়ে প্রতিটি মুহূর্ত অপেক্ষা করি তোমার জন্য। তুমি ফিরে আসো না, আমি তোমায় ভেবে আকাশ অথবা মেঘের জন্য গান লিখি।
তোমায় দেয়ার মতো কিচ্ছু নেই আমার জানি। তবুও শূন্য থেকে অসীম আমার পুরোটা জুড়েই তুমি। ছেড়ে যাওয়ার উপোয় খুজে পাইনা,তাই হয়তো আবার আবার ভুল করে ভালোবেসে ফেলি.... ক্ষমা করো আমায়
দায়িত্ব আর সামাজিকতার সুতোয় ঝুলতে থাকে একলা মেয়েটা। ফেলে আসা যুবকের দীর্ঘ ছায়া ক্ষীণতর হয়। যুবকের হাটার স্টাইল অথবা হাসতে হাসতে চুলে হাত দেয়ার অভ্যাস সবই ধীরে ধীরে অদৃশ্য হতে থাকে মনের আয়নায়।
বুকের ভিতর নতুন ব্যাথার আভাস,,,,, ভালোবাসা কখনো এক সাথে দুজনের জন্য হয়? ভালোবাসায় ভাগাভাগি টা অদ্ভুত। একজন হারিয়ে যায়, জায়গা করে নেয় নতুন কেউ।
মেয়েটা অস্থির হয়ে উঠে, নতুন ব্যাথা লুকানোর চেষ্টায় ধুসর হয়ে আসে চারপাশ।
ওই চোখে বিষন্নতার বিস্তৃতি কতদুর? অদ্ভুত অন্ধকারে মেয়েটা হারাতে থাকে।
হাহাকার ছড়িয়ে পড়ে নতুন করে জড়াতে চাওয়া মানুষটাকে ঘিরে। ওই মানুষটা জানেনা একলা মেয়েটা ডুবছে আবার না পাওয়ার ব্যার্থ ভালো লাগায়।
গল্প শেষের গল্পগুলো হয় নিরবতার।
অনেকগুলো শব্দ বাক্য থাকে ভীষন অভিমানের। কাহীনিগুলো হয় ছেড়ে যাওয়ার অথবা ছেড়ে থাকার।
শব্দহীন অভিযোগ অনুযোগে ভারী হয়ে আসে চোখের পাতা।
কিন্তু মুখ ফুটে বলা হয়না দুঃখগুলো। গল্প শেষে ঘুমঘুমি অথবা কমলা পরী একলাই থাকে। ঘাসফুল আর প্রজাপতিরও দেখা হয়না আবার- বলতে ভুলে যায় সবাই "গল্প শেষে চরিত্র সব আমার একলা জাগার মায়া"...
‪#‎এক‬ 
পরের জীবনে আমি কিন্তু ঠিক তোমার বছর পাঁচেক ছোট হবো...
আংগুলে দাঁড়িয়ে তোমার কপালে চুমু দেয়ার মতো লম্বাও হবো....
কেমন আছোর জবাবে প্রতিবার মনে মনে ভালোবাসী না বলে- চিৎকার করে জানিয়ে দেবো আমার তোমাকেই চাই...
একটা দিন সকাল বিকেল সন্ধ্যা সারাক্ষণ তোমার আংগুল ধরেই কাটিয়ে দেবো কিন্তু...
অবেলার বিরক্তি, একঘেয়ে দুপুর- সারাটাদিন কিন্তু কথায় কথায় তোমায় জালাতন করবো....
তুমি যখন ল্যাপটপ মোবাইলে মগ্ন হয়ে ডুবে থাকবে আমি কিন্তু ঠিক বারবারই তোমায় আমার দিকে তাকাতে বাধ্য করবো...
তুমি "বাই" বললে চোখের জল আটকে ঠিক আছে না বলে কিন্তু বাচ্চাদের মতো জেদী হবো। সব দ্বিধা ঝেড়ে জানিয়ে দেবো না যেতে পারবেনা কোথথাও তুমি...
অফিস বাসা মার্কেট সবটাতেই তুমি জুড়ে আমি থাকবো, পরেরবার আমি কিন্তু ঠিক তোমার বছর পাঁচেক ছোট হবো squint emoticon

Wednesday, August 19, 2015

বিয়ের বছর দুয়েক হয়ে এলো প্রায়, তাও শাহেদের সাথে তেমন কোন ঘনিষ্ঠতা আমার হয়নি। 
ভুল বললাম, ঘনিষ্ঠতা দূরে থাক, সৌজন্যততার খাতিরেও আমরা একজন অন্যজনের সাথে কথা বলিনা। 
দোষটা আমারই। সেই ছোটবেলা থেকে আমি বড় হয়েছি প্রচন্ড ছেলেভীতি নিয়ে। বাবা আমার মত না নিয়েই বিয়ের কথা পাকা করে ফেললেন। আমি যখন বললাম কিছুতেই না, আমি বিয়ে করতে চাইনা বাবা। বাবা বললেন আমি মরে গেলে শান্তি পাবি তুই, আর কথা বাড়াইনি। চুপচাপ মেনে নিলাম বাবার কথা।
বিয়ের রাতে ভয়ে অস্থির হয়ে আছি, শাহেদ রুমে ঢুকতেই কর্নারে লুকিয়ে কাঁদতে শুরু করলাম। ও কি ভাবলো জানিনা, তবে আমার কাছে আসার চেষ্ঠা করেনি ও আর। 
সত্যি বলতে আমার ধারণাই ছিলোনা কোন ছেলে এমন হয়, আমি ভেবেছি পুরুষ যখন নিশ্চয় একদিন না একদিন ঝাপিয়ে পড়বে আমার উপর। কোন বাধা শুনবেনা আমার, কিন্তু না একদিন দুদিন করে মাস পেরিয়ে গেলো।
আমি আমার মতো বাস করছি, শাহেদ তারমতো। ঘরে থেকে থেকে বিরক্তি চলে এলো। আপুকে বলে তার অফিসেই একটা জব নিয়ে নিলাম । সময় কাটাতে আর আগের মতো সমস্যা হয়না । ঘরে ফিরতেই দিন পুরিয়ে যায় ।
কেমন করে যেন বছর খানেক কেটে গেল এর মাঝেই শেষ, এর ভিতর শাহেদের সাথে আমার কথা হয়েছে বড়জোর দু কি তিনদিন। নিজের ভিতরটা বদলে যাচ্ছে স্পষ্ট বুঝতে পারছি - অফিস থেকে ফিরে নিজের অজান্তেই কান পেতে থাকি শাহেদ ফিরেছে কিনা বুঝতে। কথা বলার সুযোগ খুজতে থাকি, কিচ্ছু মাথায় আসেনা। সেই পুরনো জড়তা আকড়ে ধরে চারপাশ থেকে ।
একদিন সুযোগটা হঠাৎ করেই এলো। পার্স হারিয়ে ফেললাম ফেরার পথে। খুব সাহস করে টাকা চাইলাম শাহেদের কাছে। কিন্তু ওটা ভুল ছিলো আমার, বেচারার চেহারা রক্তশূন্য হয়ে গেলো সাথে সাথে। টাকা নেই ওর হাতে বুঝতে একদম অসুবিধে হয়নি আমার। কি বলে এড়ানো যায় ভাবছি,কিন্তু এই গাধা ব্রেনে কিচ্ছু এলোনা । ও আমার কাছে এখন নেই বলতেই চুপচাপ নিজের রুমে ফিরে এলাম।
তারপর থেকেই প্রায়ই দেখি শাহেদ আমার সামনে মানিব্যাগ থেকে টাকা নিয়ে গুনছে। এত্তো মায়া লাগে, প্রায়ই মনে হয় গিয়ে বলি আমার কিছু টাকা লাগবে দাওতো। কিন্তু জড়তা কাটিয়ে আর বলা হয়ে উঠেনা।
শাহেদ জানেনা এই চারবছরের কত বদলে গেছি আমি, ওর একটু ছোয়া পেতে উম্মুখ হয়ে থাকি সারাক্ষণই। ওর ছুয়ে যাওয়া গ্লাস প্লেটগুলো ছুয়ে দিতে যে কি ভীষণ সুখ কি করে বুঝাই! এই অনুভুতিগুলো একদম নতুন, অস্থির হয়ে থাকি সারাক্ষণ । ও কার সাথে কথা বলছে কি বলছে সব খেয়াল করি, এত্তো হিংসে হয় আশেপাশের সবাইকে ।
আর না এই এনিভারসারিতে আমি অবশ্যই ওকে বলবো আমার ভালোলাগার কথা,ভালোবাসার কথা। কাছে আসার ইচ্ছের কথা । জড়তা কাটিয়ে ভালোবাসী ঠিক জানাবো ।

Friday, August 14, 2015

অনন্তকালের গল্পটা শুরু হলে আর শেষ হয়না, দিন পুরিয়ে রাত আসেনা। রাতগুলো ভীষণ ক্ষুদ্র চোখ মেলতেই হারিয়ে যায়। অথচ দিনগুলো লম্বা থেকে লম্বাতর হতে থাকে।
একটু আর একটু পেরোলেই ছুটি, আর কটা দিন। আর কটা দিন চোখ বন্ধ করে থাকলেই আমি সব ভুলে যাবো।
ভুলে যাবো বাড়িয়ে দেয়া হাত ছুড়ে ফেলার কষ্ট অথবা আংগুলে আংগুল ছোঁয়ানো এক চিলতে সুখ।


Its so empty
a neat scary sight
Its like poison bites my life...
I fill and fill but the holes remains
its so loud,it drinks my sooul...
It was a miracle
a nasty dusty miracle.
It wishedd to kill me,
A perfect brilliant sorrow...
unlimited thirst for blood
I hid it with a blindfold
A sour nasty monster inside my mind.
ate my heart,what a sorrowful sight......
বুকের ভিতর এক চিলতে ব্যাথা নিয়ে আমি বোধহয় চিরকালই যাযাবর থেকে যাবো -
খোলা জানালায় জোছনা হয়ে আকাশ ছোয়া হবেনা আর বোধহয় আমার -
মধ্য দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যা হয়ে যাবে, আমার ঘরে ফেরা হবে না।
ব্যাথাভরা দু চোখের মায়ায় সময় বাধা হয়তো আমার হবেনা কখনই।
তবুও আমি ক্ষণিক ভালোবাসার খোজে আবারো ফেরারী হবো-
উত্থাল পাতাল সমুদ্র পেরিয়ে আধার আকাশের নিঃসঙ্গ তারাই হবো হয়তো .....


Saturday, July 25, 2015

অর্কের মুখটা ইদানিং আমার আর ঠিক করে মনে পড়েনা। অর্ক কোথায় আছে কেমন আছে কিছুই জানা হয়না আর আগেরমত। অথচ একটা সময় কি অদ্ভুত ছিলো-ওর সাথে একদিন কথা না হলেই মনে হতো নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে বুঝি কথা হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রচন্ড অস্থিরতায় ভুগতাম আর ফাইনালি যখন কথা হতো তখন বুঝতে পারতাম চরম উত্তেজনায় কাপছে বুকের ভিতরটা। ওর ছোট্ট মেসেজগুলো অদ্ভুত ভালো লাগার জন্ম দিতো আমার ভিতর, ওকে নিয়ে কেমন যেন ঘোর লাগা নেশা কাজ করতো আমার মাঝে -ওকে ভাবতে ভাবতে কিভাবে সময় কাটিয়ে দিতাম নিজেও জানিনা।
শুধু জানতাম আমার সবটা জুড়ে অর্কের আনাগোনা ছিল। আমার সব অনুভুতিগুলো ও একাই কন্ট্রোল করতো। ও একটু প্রশংসা মনে হতো সাত আসমান ফুড়ে উপরে উঠে যাই। কি ছেলেমানুষই না ছিলাম তখন!
কতবার যে মনে হয়েছে “ইশ কোনভাবে যদি ওর হার্টটা খুলে মনের ভিতরটা বুঝতে দেখতে পারতাম। তখনো বুঝতে পারিনি আমাকে নিয়ে অর্কের অনুভুতি, এখনো জানিনা ও কি সত্যিই কখনো ভালোবেসেছিলো আমাকে। ভালোবাসলে কি এত সহজে ছেড়ে চলে যাওয়া যায় !
ছোট থেকেই আমি ভিষণ নারীবাদী। সব কিছুতেই আমার ছেলেমেয়েদের সমান অধিকার বলে তর্ক করার অভ্যাস ছিলো। পুরুষবাদী সমাজের নানা দিক দেখিয়ে প্রায়ই ঝগড়া শুরু করতাম ওর সাথে, ও মুচকি হেসে আমার সব যুক্তি মেনে নিতো। রাগ করে বলতাম “তোরা সব পুরুষ একি পালের ভেড়া, ও হ্যা হাসতে হাসতে বলতো হ্যা আর তুই হলি আমার একমাত্র ভেড়ি। বোকাটা ঝগড়াও করতে জানতো না ।
মা কোথাও গেলেই হাসি হাসি মুখ করে চলে আসতো “কিরে ভেড়ি রান্না কিছু করেছিস? চা খাওয়াবি না?! বলে নিজেই কিচেনে গিয়ে চা বানিয়ে নিতো।
মাঝে মাঝে “কিরে আন্টিতো দেখছি কিচ্ছু রান্না করেন নি, খাবি কি তুই”! বলে নিজেই রান্না চড়িয়ে দিতো। আমি কিচেনের দরজায় দাড়িয়ে ওর কান্ড দেখে দেখে খুব হাসতাম। খেতে বসলেই শুরু হতো ওর “এই খুব মজা হয়েছে না রে? এরকম রান্না আর জীবনে খেয়েছিস?” আমি হাসতে হাসতে বলতাম হ্যা রে দারুন হয়েছে তোর বউ খুব খুশী হবে। ও তখন বলোতো “আমার বউতো হবি তুই’। আমাকে বিয়ে করলে এমন রান্না সারাজীবন খেতে পারবি। কি রাজীতো? ”
আমি শুনেই মুখ বাকাতাম, ও সাথে সাথে বলতো “অবশ্য আমি বিয়ে বিয়ে না করলে তোকে বিয়ে করবেই বা কে! চেহারার ছিরিচাদ নেই,তার উপর রান্নাবান্নাও জানিস না কিছু ।
আমি ভীষণ রাগ করে বলতাম, যাহ ! আমি বিয়েই করবো না। ও সাথে সাথে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়তো ” এই আমার কি হবেরে !! আমিতো বিয়ের আগেই বিধবা হয়ে গেলাম। ওর চেহারা দেখে আমি হাসতে হাসতে বলতাম ঠিক আছে! কি আর করা, সমাজ সেবা হিসেবেই নাহয় আমি তোর গলায় মালা ঝুলাবো।
অর্কের আকাশ কখনোই খুব একটা পছন্দের ছিলোনা। আমার আকাশ ভালো লাগতো বলে প্রায়ই বলতো ‘একটু ছুতে না পারলে এ কেমন ভালোলাগা রে ?! আমারতো বৃষ্টি প্রিয় । বৃষ্টিতে মাখামাখি করার মজাই অন্যরকম “। তারপর আমার দিকে ঝুকে ফিসফিস করে বলতো ” তুই আমার বৃষ্টি হবি ? ভালোবাসায় মাখামাখি করে রাখবিতো আমাকে ?” কথাগুলো বলার সময় অদ্ভুত ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে থাকতো আমার দিকে । নিজের বুকের ভিতর ঢিপঢিপ শব্দ স্পষ্ট হয়ে কানে লাগতো আমার, ইচ্ছে হতো সব ভুলে ওর মাথাটা বুকের ভেতর চেপে ধরে রাখি ।
আমি শুধু অর্ককে চাইতাম, আমার সবকিছু দিয়ে শুধুই ওকে পেতে চেয়েছি আমি। ভেবেছিলাম বিয়ের পরদিনই মজার মজার সব রান্না করে চমকে দেবো ওকে, বলবো কিরে কি মনে হয় আমিও পারিতো ? অর্কের জন্য আমার ভালোবাসা ছিলো মাতাল ঝড়ের মতো, আমি শুধু এক একটি করে দিন গুনতাম। মনপ্রাণ দিয়ে ওর বউ হবার কামনা করতাম। অর্ক জানতো আমার ওর জন্য জমিয়ে রাখা উন্মাদ ভালোবাসার কথা । ও প্রায়ই আমাকে বলতো” এমন করে তাকিয়ে আছিস কেন ? পাগল হয়ে যাবোতো। আমি পাগল হয়ে গেলে পরে লোকে বলবে তোর বর পাগল।
অর্ক পাগল হয়নি, আমাকে পাগল করে দিয়ে চলে গেছে। ওর প্রিয় বৃষ্টির দিনেই সব ছেড়ে চলে গেছে ও অনেকদুর। ফেলে গেছে আমাকে ভীষন একলা এই ভুবনটায়।
কেন অর্ক ! কেন ? তোরতো আকাশ প্রিয় ছিল না, তবুও কেন তুই আমার জন্য আকাশই হয়ে গেলি ! আমার চারপাশটায় এখন নীল আকাশ, চার পাশটাই তুই – সারাক্ষণ দেখতে পাই শুধু ছুতে পারি না । তুই নেই তবুও কেন আমার সারা শরীরে যন্ত্রণা হয়ে তুই বেচে থাকিস ?! তোকে ছাড়া আমার যে সব শুন্য, সবকিছুই আধার । আমিতো শুধু তোর লক্ষী বউ হতে চেয়েছিলাম, জীবনে আর কিচ্ছু চাই নি -তবুও কেন চলে গেলি অর্ক ?
কেমন আছিস তুই আমাকে ছাড়া ?
ভুল করে প্রজাপতিটা এসে বসতেই ঘাসফুলটার ভীষণ অহংকার হতে থাকে। প্রজাপতির রং নিজের ভেবে একলাই গুনগুনিয়ে উঠে সতেক তেরো গান।
প্রজাপতিটাও অবাক হয়ে সে গান শুনতে থাকে। ঘাসফুলের গানে কোন সুর ছিলোনা ; শুধু শুন্য কিছু বিষাদ। নিজের অজান্তেই পাখার রং ছিটিয়ে আদর মেশায় ঘাসফুলের জলে।
ঘাসফুল সে আদর ভালোবাসা ভেবে ভুল করে, আবারো ভীষণ মায়া নিয়ে গাইতে থাকে একসাথে জীবন কাটানোর স্বপ্ন আর ফেলে আসা একাকীত্ব নীড়।
শেষটায় রংধুনু মুঠোয় রাখা প্রজাপতির ঘাসফুলে বেধে রাখা সাধ্যি কার! প্রজাপতি উড়াল দেয়। উড়ে যায় একফুল ছেড়ে অন্য ফুলে। ঘাসফুল করুণ চোখে চেয়ে থেকে ফিরে আসার প্রার্থনায় ; ফিরে না প্রজাপতি। ঘাসফুলটার দেখা হয় নতুন প্রজাপতির সাথে।
ঘাসফুল ফিরিয়ে দেয় ; বুকের মধ্যে আসন গাড়া পুরনো প্রজাপতিই তার চাই। ধুসর হয়ে আসা পুরনো অপেক্ষা, রংধনুর মাঝে তার ছায়া। ঘাসফুলটা শিখে ফেলে - আসলে জীবন একলাই কাটাতে হয় ;একাকীত্ব কখনো পুরায়না। প্রজাপতিরাও ফিরে না।
প্রতিশ্রুতিরাও ভুলে যায় পুরনো দিনের কথা।
বিরান পথে একলা হেটে যাই, হঠাৎ করেই মরুভুমির মাঝে গজিয়ে উঠা ক্যাক্টাসের বেগুনী ফুল দেখে মনে হয় তোমাকে বড় দরকার।
কতদুর তুমি; তোমাকে ভাবতেই ছুয়ে দেয়ার তৃষ্ণাটা বেড়েই যায়।
ঘুম ভেংগে চায়ের কাপটা হাতে নিতেই মনে হয় এই মূহুর্তে তোমাকে প্রয়োজন প্রয়োজন ছিলো। অন্তহীন পথের যাত্রায় ক্ষয়ে যাওয়া জুতো জোড়া হাতে তুলে সমুদ্র জলে পা ডুবাই। চারপাশে সব হাসিখুশী প্রাণের মেলা আমার সব মুগ্ধতায় তোমাকে প্রয়োজনের চেয়েও বেশী করে চাই।
তুমি দুর প্রবাসে ; তোমাকে বড় দরকার .....
দেখা হবে হবে করেও আমাদের আজো দেখা হয়নি অথচ ঘুমালেই তোমার দুটি হাত জড়িয়ে থাকার স্বপ্নটা তাড়া বেড়ায়। দেখা হয়নি কখনো তারপরো স্বপ্নের মাঝে তোমার সাথে কাটানো মুহুর্তগুলো স্থির ছবি হয়ে ভেসে থাকে।
চোখ ভরতি জলে ঘুম ভাংগে প্রতি প্রভাতেই। রাত জেগে টিভি দেখা আর অফিসের শত ব্যাস্ততার ভিড়ে আগোচরে চোখের জল লুকোনোর মুহুর্ত।
রাতের পর রাত আমি জেগে থাকি তুমিহীনতার অস্থিরতায়। হাজার মাইল দুরুত্বে তোমার কন্ঠ ভেসে আসে মিনিট সেকেন্ড অথবা আধ মূহুর্তের জন্য। আজন্ম তৃষ্ণা আমার বেড়েই চলে।
মুঠোফোনে কথা বললেই কি কষ্টগুলো দুরে সরে!
কষ্টগুলো হারায় না, রাতের অন্ধকারের কালো মেঘেও কষ্টগুলো চুপটি করে পালিয়ে থাকে। ভালোবাসাগুলো নির্জিব তোমাকে ছাড়া। তাইতো খুজে বেড়াই পথের পর পথ হারিয়ে।

সত্যি মিথ্যে তুমি আমি

আকাশ ছোয়া কাব্য তুমি
পাথর ছোয়া ফুল
তন্দ্রা ক্ষয়ে রূপোর কাঠি
নেশা ধরা ভুল ।
নীলছে পাতায় তোমায় আকি
এলোমেলো চুল ,
চন্দ্রিমাতে সমুদ্র স্লান
ফিরিয়ে নিও ফুল ।
অলীক আমার মিথ্যেপূরী
বিভ্রমেতে ভরা
সত্য রাজ্যের পায়রাগুলো
জন্ম থেকেই মরা ।
নিজের ভিতর তোমায় খুজি
লক্ষ জনম চুড়া
সত্য খুজি, মিথ্যে খুজি
আকাশ ভরা তারা ....

Sunday, June 28, 2015

মধ্যাহ্নের আকাশ

সামনেই অধরার পরীক্ষা, পরীক্ষার সময় রাত জেগে পড়াটা অধরার ছোট বেলার অভ্যাস কিন্তু অধরা আজ জেগে থাকবেনা কারণ অধরা জানে ও জেগে থাকলে তামীমও জেগে থাকবে । ফোনের ওপাশে একলা একলা অধরার সাথে জেগে রাত কাটিয়ে দিবে । তাই অধরা তাড়াতাড়িই ঘুমোতে বিছানায় যায় , যদি ভোরে উঠে পড়তে পারে একটু ।

 অধরা একদমি মিথ্যে  বলতে পারে না, ও প্রায় ভাবে মিথ্যে বলতে পারলে হয়তো ভালই হতো । অন্তত এই সময়গুলোতে । ও না ঘুমালেও মিথ্যে বলে তামীমকে ঘুম পাড়িয়ে দেয়া যেত । খাওয়ার সময় না থাকায় খেতে না পারলেও তামীমকে খেতে বাধ্য করতে পারত কিন্তু এখন কিছুই হয়না, তামীম খাচ্ছেনা অধরার অপেক্ষায় বসে আছে । তাই অধরা সব কাজ ফেলে ছুট লাগায় কিন্তু অধরার কাছে তামীমের এই ব্যাপারগুলো ভীষণ ভাললাগার । যতবার তামীম এমন বাচ্চাদের মত জিদ করে ওর কাছে মনে হয় ও বুঝি আবারো নতুন করে তামীমের প্রেমে পড়েছে ।

তামীমের সাথে অধরার পরিচয় রাস্তার ওপাশের ছোট্ট ক্যাফেটায়। অধরা আরো চারটা মেয়ের সাথে মেস করে থাকে কিন্তু ভোরে ভোরে উঠে চা বানাতে ওর কখনো ইচ্ছে করে না তাই প্রায় দিন সকালেই ওখানে চা খেতে যায় অধরা । আর তামীমও ছিলো সেই ক্যাফের নিয়মিত কাস্টোমার । কখনো সাথে দু'এক বন্ধু আবার কখনো একা । ঢুকতে বের হতে হঠাৎ হঠাৎ চোখে চোখ পড়ে যাওয়া- ব্যাস এইটুকুই ।

একদিন হঠাৎ করেই তামীম হাসি হাসি মুখ করে এগিয়ে আসে " আপনাকে প্রায়ই দেখি । অধরা নির্লিপ্ত মুখে জিজ্ঞেস করে" দেখলে কি হয়েছে ?
তামীম একটু দমে গিয়ে বলে" না মানে একটু পরিচিত চাচ্ছিলাম । অধরা কঠিন মুখে সরাসরি নিষেধ করে " কোন দরকার নেই । বিব্রত তামীমও "আচ্ছা ঠিক আছে বলে পালিয়ে আসে ।  এরপরের দিন কাচুমাচু মুখ করে আবার উপস্থিত হয় অধরার টেবিলে  । অধরা দেখেই আবারো গম্ভীর হয়ে যায় " একবার বলেছি না পরিচিত হতে ইচ্ছুক নই ! " না মানে পরিচিত হতে আসিনি ।
তাহলে কি ?
"আসলে আমার এক বন্ধু আপনার প্রেমে পড়েছে, ও আপনার সাথে একটু কথা বলতে চায়' ।
কোন উত্তর না দিয়ে অধরা উঠে হাটতে শুরু করে  ।

দুদিন পর আবারো কাচুমাচু মুখে তামীমের আবির্ভাব । ওর মুখ দেখে রাগ করার বদলে এবার অধরা হেসে ফেলতে বাধ্য হয়। হাসতে হাসতেই জিজ্ঞেস করে " বলুন শুনি আজ কি বলতে এসেছেন ? হাসি দেখে তামীম একটু সাহস পায়" আমি আপনাকে ভালোবাসী ।

অধরা গম্ভীর হয়ে জিজ্ঞেস করে  "সেদিন না বললেন আপনার বন্ধু আমাকে ভালোবাসে ! আজ আপনি ভালোবাসেন !
তামীম বলে " না মানে আপনি সেদিন আমাকে যেভাবে ঝাড়লেন, আর কেউ আমাকে এত কঠিন করে এর আগে ধমক দেয়নি । তারপর থেকে শুধু আপনার ঝড়ি খেতে ইচ্ছে করছে ।

অধরা শুধু কঠিন মুখে বলে " আপনি আমার সাথে মজা করার সাহস কোথায় পেয়েছেন আমি জানি না । তবে ভবিষ্যতে না করলেই ভালো হবে  ।
তামীম দু হাতে কানে ধরে বলে উঠে " সরি সরি এই কানে ধরলাম । ক্ষমা চাই । একটু বসি আপনার সামনের চেয়ারটায় ?
কি ভেবে যেন অধরা রাজী হয়ে যায় ।
তামীম চুপচাপ বসে থাকে সামনে - কি বলবে ঠিক খুজে পায়না । সেদিনটা এমন করেই শেষ ।
দুদিন পর তামীম আবার আসে, দুজনের মাঝে হালকা কথাবার্তাও হয় ।
এভাবেই মাঝে মাঝে তামীম আসতো গল্প করতে । একসময় নাম্বার এক্সচেঞ্জ করে ওরা, তারপর রাত জেগে অনর্থক সব গল্প ।

তামীমকে এখনো অধরার ভালোবাসী কথাটা বলা হয়নি। অধরা জানে তামীম তার ব্যাপারে ভীষণ কেয়ারিং কিন্তু তামীমও কি বন্ধুর চেয়ে বেশী কিছু ভাবছে কিনা এই ব্যাপারে এখনো ও শিউর না । তাই জড়তা কাটিয়ে ভালোবাসী কথাটা বলা হয়ে উঠেনি এখনো । প্রতিবারই কথা শেষে লাইন কেটে গেলে অধরা ফোন হাতে ফিসফিস করে ভালোবাসী, ভালোবাসী , ভালোবাসী ।

প্রায়ই ভাবে আজ বলবো, কাল বলবো। শেষ পর্যন্ত বলা হয়না ।  হঠাৎ করেই তামীম জানায় দুদিন দেখা হবে না ।
"গ্রামের যাচ্ছি দিদার সাথে দেখা করতে ।  কথাও হবেনা - আব্বু যাচ্ছেন সাথে । টেক্সট করবো ।
"আচ্ছা যা । ভালোই ভালোই ফিরে আসিস ।
"আমি দুদিন না থাকলে তোর দেখা শুনা করবে কে গাধী ? খাওয়াদাওয়া না করে করেতো একদম মরে যাবি !
"আরে যাহ যাহ । তুই আসার আগে আমি বেছে ছিলাম না বুঝি !
"ও হ্যা তাইতো । বেচে ছিলিতো - ঠিকমত খাবি কিন্তু এ দুদিন । নাহয় আমি এসেই মাইর লাগাবো একদম ।
"খাবো তোর এত ভাবতে হবে না ।
বলেই অধরা মুখ ঘুরিয়ে নেয় । ইদানিং তার এ সমস্যা হচ্ছে - তামীমের সাথে একটু কথা বললে চোখ ভর্তি হয়ে যায় জলে । কি লজ্জার ব্যাপার । নিজেকে সামলাতে কষ্ট হয় । তামীমটা বুঝে ফেললে সর্বনাশ ।


অধরার স্পষ্ট মনে আছে সে সময়টা এখনো ।
" চারপাশে সবুজ আর সবুজ কি সুন্দর জায়গাটা বিশ্বাস করবি না । একদিন তোকে নিয়ে আসবো , আসবিতো আমার সাথে ? হুম আসবো ।
ওটাই ছিলো ওদের শেষ যোগাযোগ ।


এরপর থেকে আজ দুদিন তিনদিন চারদিন কেটে গেছে । কিন্তু তামীমের কোন খোজ নেই । অধরা অসংখ্য বার মেসেজ দিয়েছে , কল দিয়েছে । সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না ।

মোবাইল হাতে বারবার ইনবক্স চেক করছে অধরা । তামীমের কোন মেসেজ নেই । হঠাৎ করেই "your message has been delivered লিখাটা দেখে অধরা লাফিয়ে উঠে । কল দেয় । ওপাশ থেকে একটা মেয়ে রিসিভ করে "হ্যালো ? অধরা থমকে যায় । জিজ্ঞেস করে "এটা তামীমের নাম্বার না ? জি । আমি তার ছোট বোন ।
তামীম কোথায় ?
ভাইয়া দুদিন আগে গ্রামে যাওয়ার পথে রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছেন । ওপাশ থেকে ফুফিয়ে কান্নার শব্দ পাওয়া যায় ।
অধরার পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে আসে ।

ঘোরের মাঝে কতক্ষণ ছিলো অধরা জানেনা । ঝাপসা ঝাপসা কিছু ছবি চারদিকে , বান্ধবীদের উদ্বিগ্ন মুখ । মায়ের এসে হাত ধরে টেনে তোলা , স্টেশানে ঝিকঝিক রেলগাড়ি । পরিচিত পুরনো ঘর । সবকিছু চাপিয়ে তামীমের হঠাৎ হঠাৎ হাহাহা শব্দের ভরাট গলার হাসি । কোন সত্যি কোনটা স্বপ্ন ঠিক ধরতে পারেনা অধরা ।  আধ বছর শেষ অধরা কিছুতেই সুস্থ হয় না । সারাক্ষণ কাটে নিজের ঘরে চুপচাপ বসে থেকে ।

সহ্যের শেষ সীমায় এসে মাও তিক্ত হয়ে উঠেন । চড় দিয়ে বসেন অধরার গালে, তারপর অধরাকে জড়িয়ে ধরে নিজেই কাঁদতে বসেন । এই মেয়েটা তার বড় আদরের, কখনো গায়ে হাত তুলেন নি । আজ তাই করে বসেছেন রাগের বশে  ।

অধরা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে । একটু একটু করে চারপাশটা দৃশ্যমান হয় অধরার কাছে । ছ মাস পর প্রথমবারের মতো ঢুকরে কেদে উঠে মেয়েটা । "আমি যে এখনো ভালোবাসী কথাটাও বলতে পারিনি মা । হাহাকার করে উঠে অধরা ।মা আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরেন । অধরা কাঁদতেই থাকে, পৃথিবীর সব কান্না জমা হয়ে আছে ভিতরটায় ।
সেদিন থেকে অনেকদিন কেটে গেছে। হঠাৎ করেই অধরাকে ঘর থেকে বের হতে দেখা যায় । একটু একটু করে সামনে এগোয় সে ।

 মধ্যাহ্নের আকাশ জুড়ে থোকা থোকা কৃষ্ণচুড়া ফুল । বুক ভরে নিশ্বাস নেয় । তারপর তাকায় আকাশের দিকে -কতদিন আকাশ দেখা হয়না আমার ।  
"আমি ভালো থাকবো তামীম- তুইও ভালো থাকিস আকাশের ওপারের জগতটায়" ফিসফিস করে মেয়েটা ।  




Sunday, June 14, 2015

আমার আনোকা,
    তুমিতো জানোই তারাভরা আকাশ আমার অসম্ভব প্রিয়। জোছনারাত গুলোও আমার তত ভালো লাগেনা- যত ভালো লাগে আকশের বুকে মিটমিট করা তারাগুলো দেখতে ।

প্রায় রাতেই আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা তারাগুলো দেখি কিন্তু অদ্ভুত কথা কি জানো চোখ বুজলেই আমি দেখতে পাই হাজার হাজার তারার মাঝে তুমি দাঁড়িয়ে আছোচারপাশে পাশে ছিটিয়ে থাকা তারার মেলা মাঝখানে একলাই অসম্ভব সুন্দর তুমি হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকো
তোমায় ভালোবাসতে বাসতে আমার আকাশটাও যে কবে বদলে গেছে আমি বিন্দুমাত্র জানতে পাইনি জানো । মেঘলা আকাশেও আমার তোমাকে চাই, ঝুমঝুম বৃষ্টিতেও তোমার ছোয়া পাই- তুমি এতো দূর অথচ তোমায় ভাবলেই আমি যেখানে সেখানে রংধনু দেখতে পাই । 

আমিতো বরাবরই আধারের যাত্রী ছিলাম, তুমিই টেনে এনেছ আলোরেই পৃথিবীতে । এখন তোমায় ছাড়া কেমন করে থাকি বলো ! জানোতো তোমায় ছাড়া এতো আলোর ঝলমলে পৃথিবীটাও আমার অন্ধকারই লাগে।
জানি তুমিও অস্থির হয়ে আছো ফিরতে আমাদের একলার ভুবনটায় – কিন্তু কি করি বলো সমাজ নামের অদৃশ্য শেকলটা আষ্টেপিষ্ঠে বেধে রেখেছে সেই জন্ম থেকেই । পৃথিবীর সবাইকেই আমার শত্রু মনে হয় জানো-যখনি ভাবি তোমার সময়ের একটা সেকেন্ড মিনিটঘন্টা ওরা নিয়ে নিচ্ছে হিংসেয় জ্বালিয়ে দিতে ইচ্ছে করে সব । তোমার সময়,তোমার ছোয়া,তোমার পলক সবই কি শুধু আমার নয়! কেন তাতে অন্য কেউ ভাগ বসাবে বলো!

প্রিয় আনোকা তোমায় ছাড়া আমি যে বাচতে একদম পারবো না জানতো। প্রায়ই চোখ বুজে আমি তোমায় নিয়ে ভাবি, ভুল বললাম তোমার আমার ভবিষ্যটা ভাবি
আমার তোমার একান্তই নিজস্ব একটা ভুবন । সেখানে ঠিক তোমার চেহারার মিষ্টি একটা মেয়ের দোড়াদোড়ী– আমার আনোকা দ্যা সে\কেন্ড । বাইরে থেকে এলেই "পাপা" বলে ঝাপিয়ে পড়বে । আর তুমিও সব কাজ রেখে ছুটে আসবে, হাসিমুখে জানতে চাইবে সব ভালবাসা শুধু ওর জন্য? আমার ভাগ কোথায় ! তোমার ছোয়ার জন্য সারাদিন ভুবুক্ষ থাকা আমি তোমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলবো "জি না ম্যাডাম তোমার আগে কিচ্ছু না" ।

চিঠিটা লিখতে লিখতে আমি কিন্তু তোমায় স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, শেষ লাইনটা পড়েই তোমার মুখ লাল হয়ে উঠছে । তুমি চিঠিটা গালের সাথে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে আছ। তারপর ঠিক এই মুহূর্তে অবাক হয়ে চারপাশে কোথাও আমি আছি কিনা খুজছো তাই না ? পাগলী । আমার চিঠি পেলে তুমি কি কর আমার সব মুখস্ত আছেতো ।  

জানো তোমার লাগানো গাছটাতে অদ্ভুত নীল একটা ফুল ফু্টেছে, আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি । আমার ঘরে কখনো ফুল ফুটবে ভাবতেই পারিনা, জানোতো কোন কিছুর যত্ন নেয়া আমাকে দিয়ে হয়না। শুধু তোমার হাতে লাগানো বলেই রোজ পানি দেই । ফুলটা দেখতে খুব ইচ্ছে করছে তাইনা ? আমি কিন্তু ছবি পাঠাবো না । তুমি দ্রুত ফিরে আসো নাহয় ফুলটা ঝরে যাবেতো। ফুলের সাথে আমিও কিন্তু ঝরে যাবো বলে দিলাম, তোমায় ছাড়া বাচতে পারছিনা আর ।

তোমার

এরন 

Wednesday, May 27, 2015

দিনের শেষে ক্লান্তি আর শুন্যতার ভিড়ে এককাপ ধোয়া উঠা চা। তরুণীর হাতের কাচের চুড়ি রিনিঝিনি ছন্দে হেসে উঠে। তরুণী এলোচুল ছড়িয়ে উঠে দাঁড়ায় হাত বাড়িয়ে দেয় -ঠিক ওখানটায় যেখানে আংগুলের ফাকে যুবকের আংগুল জড়িয়ে থাকার কথা ছিলো -
সেখানে আজ অসীম শুন্যতা।
আংগুলের ফাকের শুন্যতা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তরুণী লম্বা লম্বা চুল আংগুলে জড়িয়ে বারান্দায় মানুষের আনাগোনা আর ব্যাস্ত ট্রাফিকের হৈ হুল্লুড়ে হারাতে থাকে। দিনগুলো সব হুটহাট কেটে যাক, যুবকের মতই হঠাত একদিন হারিয়ে যায় অসীম অন্ধকারে । ফিরে না আসুক কোন দিনের ছায়া।
বহুদিন আগের যুবকের কন্ঠে সমুদ্র – এসো আমরা পালিয়ে যাই সব ছেড়ে দুরে কোথাও। চারপাশে দিনের আলোয় জোছনার নরম রোদ ছুইয়ে ছুইয়ে পড়ে। যুবকের পাগলামীতে তরুণীর খিলখিল হাসি বাস্তবতায় থমকে থাকে। তরুনীর চোখের কোনে শুকনো জলের দাগ।
ক্লান্তি নিভিয়ে সব অচেনা হয়ে উঠুক – যুবক মেঘ হয়ে ভেসে যাক। পায়ের দাগ বালিতে ফেলে রেখে তরুণী সমুদ্রের গভীরে ডুবতে থাকে – ওই এক ফোটা মুখে ভালোবাসার চুমুক। যুবকের অচেনা দুটো চোখ নাহয় আজ ক্ষনিকের জন্য তরুণীর হোক।
বৃষ্টি ডাকে করুণাধারায়। আজ সব, উত্থাল পাতাল ঝড় আজ ভাসিয়ে নিক তরুণীর গান ।
<<<ইচ্ছে খাতা>>>
টুপুর টাপুর বৃষ্টি হবো
রিনিঝিনি নুপুর হবো
সাধ্য ছুড়ে আকাশ ছুবো
ইচ্ছে খাতার বুলি হবো
নদীর জলে ঢেউ উঠাবো
স্বপ্ন ছিলো বেশ।
পড়ন্ত এক বিকেল হবো,
তুলসি পাতায় নকশে হবো,
একলা সাঝের ছন্দ হবো,
মিথ্যে কথার রানী হবো
হবো কিরণমালার কেশ।
অলীক সুখে গা ভাসাবো,
নীল সাগরে ঠোট ভেজাবো,
নানান রঙের স্বপ্ন হবো,
ইচ্ছে পাহাড় পাড়ি দেবো
ভেবেছিলাম বেশ।
স্বপ্নগুলো মিলিয়ে গেলো,
ইচ্ছে গুলো শুন্য হলো,
বুকের মাঝে ময়না পাখি
দুঃখের গানে সুখকে ডাকি,
গল্প হলো শেষ।।।।।
ইদানিং প্রায়ই রাত জাগছি
নষ্ট হবার কষ্টে তোমায় ভেবে কাব্য আকছি
মিথ্যে মিথ্যে ভালো আছি - ভালো থেকো রচনা গাইছি ।
ফেসবুক ইনবক্স মেসেঞ্জারে বারবার তোমায় খুজছি
ইদানিং সত্যিই তোমায় খুব বেশী বেশী ভাবছি
আকাশ ভরা তারা আর জোনাক পাড়ার নেশায় মিছেমিছি আলোর ছবি বাধছি।
ইদানিং আমার সময় কাটেনা,
বিষন্নতা আগেরমতো কুড়ে কুড়ে খায়না
সব কিছুতেই ভুল, সব কিছুতেই ছল -
খেই হারিয়ে খেয়াল করি আমি আবারো তোমায় ভাবছি।

Wednesday, May 20, 2015

পাহাড়ের কোল ঘেষে ধুসর কুয়াশা.....
কুয়াশা কি ধুসর হয়? মেঘগুলো লাল নীল হয়ে উঠেনা কেন!
রঙ ছিটানোর খেলায় যে এখনো আমি ভীষণ আনাড়ি...
দুর থেকে দুরতর হয় তন্দ্রা নদীর ঢেউ....
শিশিরের বাধ ঘেঁষে বাঁচে সবুজ ঘাসফুল,
অচেনা কেউ হেটে যায় পথের পর পথ।
হঠাৎ হারিয়ে যায় পাহাড় থেকে ঝুলে থাকা শুভ্র সব মেঘে।
বাদল দিনের প্রতিক্ষায় থেকেও মেঘগুলো বদলায় না.... আকাশটা যে আমার মেঘগুলো তাই শুভ্র...
কাছে থেকেও অস্পৃশ্য -
জানোতো খুব বেশী কাছে যেতে নেই, যতটা,কাছে গেলে জোছনাগুলো বাষ্প হয়ে উড়ে যায়....
আমার আকাশ
কেমন থাকছ তুমি ? হাহাকারগুলো এখনো কি ছুয়ে এলোমেলো করে যায় তোমায় ?
বিশ্বাস করো আমি কক্ষনো চাইনি তোমায় ব্যাথা দিতে, তোমার কষ্টগুলো নিজের করতে প্রতিনিয়ত প্রার্থনায় মগ্ন থেকেছি । তবুও আবারো নিজের আত্মভিমানে সব ভুলে হারিয়েছি বারবার দৃষ্টির আড়ালে । জানতো ওইটুকু ছাড়া আমার যে নিজের বলে আর কিছুই নেই ।
আমি ভালো আছি । পদ্মপাতায় একফোটা শিশির যেমন থাকে আমি ঠিক তেমন করেই ভালো আছি । নিভে যাওয়ার আগে প্রদীপের সলতে একবার জ্বলে উঠে যেমন তারমতই ভালো আছি । বিশ্বাস করো আমি সত্যিই ভালো আছি – হয়তো আগের মতই পাগলীই আছি তবে এখন নিঃশ্বাসের কষ্টগুলো বাতাসে মিলিয়ে দিয়ে হাহাকার খুজে বেড়াই না আর ।
বারবার চিৎকার করে নিজের অস্তিত্বে সাড়া জাগাই "আমি ভালো আছি আকাশ- আমি ঠিক আমার মতো করেই ভালো আছি । মাঝরাতে তন্দ্রাচ্ছন্ন অর্ধমৃত আমি আর তোমাকে খুজি না - জানি ভীষণ ভয়ে কাতর আমায় শান্ত করতে তুমি আর কক্ষনো হাত বাড়িয়ে দেবেনা ।
বারবার ভালোবাসিনা বলে আবারো প্রেমে পড়ি আমি তোমার অথচ বিশ্বাসের মাতাল বৃত্তে আমারই স্পন্দিত হাহাকার । তুমি রয়ে যাও অস্পৃশ্য – দূর থেকে আমি খুজে বেড়াই তোমার মিথ্যে ঘরে অন্ধকার ভালোবাসা । ভালোবাসতে হয়তো আমি শিখিনি তবুও তোমায় ভীষণ করে চেয়েছিলাম আকাশ । এখনো দীর্ঘশ্বাসগুলো চিৎকার করে বলে আমার তোমাকে চাই , তোমাকে চাই ।
আর চাইবোনা আকাশ বিশ্বাস করো আর একদম চাইবোনা, আমি ভীষণ করে ভালো থাকবো । তুমি শুধু এমন করে নিষ্ঠুর হয়ো, ভালোবাসার চাঁদরে ঢেকে পিছু ডেকো না কক্ষনো । তবেই আমি ভালো থাকতে শিখবো, ভালো থাকবো জেনে তোমার বৃষ্টি মেঘ জোছনা আমি কখনোই হতে জানিনি ।
শুধু তুমি এমন নিষ্ঠুরের মতো আমায় আঘাত করে যেও , আমিও ভালো থাকতে জানবো ।
ইতি
আমার আমি

Monday, May 11, 2015

একদিন দুদিন, ভুলে থাকার তিনদিন।
অতঃপর ভালোবাসা হোক বোধহীন.......
আমার সব খাপছাড়া কথা আর এলোমেলো চুল তোমার কাছে চিরকালই পাগলামী ছিলো জানি ।
তবে ভুলে যেওনা ছেলে -
ভালোবাসা একদিন সত্যিই এসেছিলো।
হ্রদয়ের ঠিক ওখানটায় হাটু গেড়ে বসে নম্রত শুধু আমাকেই কামনা ছিলো।
দামাল ঘোড়ার মতো আবেগ- রাশ টেনে তুমিও থামাতে পারো নি।
ছুটে এসেছিলে এক আজলা জলের আশায়। সেদিন তোমায় আমি ফিরিয়ে দেইনি -
সে অধিকারে নাহয় আজ তোমার কাছে আবার কিছু চাইবো।
মুক্ত হওয়ার আমৃত্যু অহংকার টুকুই নাহয় চাইবো।
যেদিন জানলে তোমায় ঠিক ঠিক সুখ দেয়ার ক্ষমতা আমার নেই,
সেদিনই পালিয়ে বাচলে!
তোমায় দোষ দেইনা ছেলে-
বুকের মাঝে আসন পেতে বসা ভালোবাসাটা ওইটুকুতেই উরাল দিলে তোমার অপরাধ কোথায়!
ভালো বাসতে যে আমিও শিখেছিলাম।
তাইতো সুখ পালক ধরার অধিকার হারাতেই- তোমাকে পাওয়ার লোভটুকুও খুইয়ে দিয়েছি সে কবে।
এত ভয় পেলে কি আমার চলে!
তাই আমিও স্বার্থপর হবো আজ ছেলে;
দুহাত পেতে তোমার কাছে নিঃশর্ত মুক্তি চাইবো ।
এইটুকু স্বার্থপর হওয়াতে কি দোষ হয় বলো!
অনেকদিন আগে তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে বিশাল সবুজ বনে একলা এক ছেলে থাকতো। নিঃসঙ্গ ছেলেটা যখন তখন পাতার বাশীতে সুর তুলতো।
ঠিক বনের বাইরেই ছোট্ট কুড়েতে থাকতো পাগলী একটা মেয়ে। লম্বা লম্বা চুল পিঠের ছড়িয়ে দিয়ে মেয়েটা প্রায়ই গুনগুন করে গান করতো। বুনো ফুল আর কৌতুহলি হরিণের সাথে রোজকার গল্প করতো।
তাদের দুজনেরই অদ্ভুত দুটো স্বপ্ন ছিলো। ছেলেটা বিশাল মাঠ হতে চাইতো, আর মেয়েটা হতে চাইতো বর্ষার রিমঝিম বৃষ্টি । স্বপ্নটা আরেকটু গভীর ছিলো ছেলেটা মাঠ হয়ে বুকের মাঝে বৃষ্টি বন্দী করতে চাইতো, আর মেয়েটা চাইতো বৃষ্টি হয়ে বিশাল ওই মাঠটাতেই ঝরে পড়তে ।
তাদের হঠাৎ হঠাৎ দেখা হতো। মেয়েটা যখন সপ্তাহশেষে ফল কুড়াতে বনে যেত অথবা নীল জোস্নায় উত্থাল পাতাল আবেগে ছেলেটা যখন বাশীতে সুর তুলতো - মেয়েটা তার গুনগুন গান বন্ধ করে ঘরের দাওয়ায় এসে গলা ছেড়ে গান ধরতো। ছেলেটার বাশি আর মেয়েটার স্নিগ্ধ গান মিলে পুরো বন জুড়ে অদ্ভুত সুরের ঝংকার সৃষ্টি করতো। বনের সব প্রাণীরা জড় হতো অদ্ভুত এই ভালোবাসার কাপন শুনতে।
প্রাণিদের সাথে বন দেবীও লুকিয়ে শুনতেন এ দুজনের মোহময়ী যুগল সঙ্গীত। গান শুনতে শুনতে একরাতে হঠাত বন দেবীর মনে হলো আমি এদের একটা পুরষ্কার দিতে চাই। তখন বনদেবী ছেলেটা আর মেয়েটা কে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন "আমি তোমাদের একটি ইচ্ছে পূর্ণ করবো - বলো কি চাও?
দুজনেই তাদের স্বপ্নের কথা খুলে বললো। বন দেবী ভীষণ বুদ্ধিমতি ছিলেন। ওরা কেন বৃষ্টি আর মাঠ হতে চায় তিনি এক নিমিষেই বুঝে নিলেন। এবং বৃষ্টি আর মাঠ না বানিয়ে তিনি তাদের দুজনের বিয়ে দিয়ে দিলেন।
অতঃপর তারা সুখে শান্তিতে বাস করতে লাগলো। বৃষ্টি হলেই তারা হাত ধরাধরি করে ভিজতো আর জোছনা কাটাতো পাশাপাশি থেকে সারারাত। কিছুদিন পর ওদের খুব কিউট একটা বাবু হলো। বাবুটার নাম? আমি না ওরাই বলবে wink emoticon
গল্পটা এই পর্যন্তই।

Tuesday, April 28, 2015

ভালোবাসা ও তারপর

সাদিকের হাত ধরে এতটা পথ আসাটা আমার জন্য মোটেও সহজ ছিলনা,  সেই প্রথম থেকেই সাদিক একটু মুডি আর ভীষণ লাজুক । নিজের জড়তা কাটিয়ে ওর সাথে কথা বলবো এই সাহস আমার হয়নি কিছুতেই তাই , তাই সব ভাললাগা লুকিয়ে রেখে দূর থেকে তাকিয়ে থাকাতেই তৃপ্ত ছিলাম আমি ।

প্রথম যেদিন সাদিক আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো- আপনি প্রায় আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন তাই না ? লজ্জা ভয় দুটোই একসাথে আচ্ছন্ন করেছিল আমাকে । মাটির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অজান্তে কখন কাঁদতে শুরু করেছি নিজেও বুঝতে পারিনি । বিব্রত সাদিক ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলার মত খুজে পাচ্ছিলনা কিছু। একি কথাই বার বার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলছিল- আমি অত্যন্ত দুঃখিত, সরি সরি ।

তারপর নিজে থেকেই স্বীকার করলো আসলে ও আমার সাথে কথা বলার এক্সিউজ খুজতেই এই কথাটা বলেছে । ওর এই কথা শুনে কান্নার মাঝেই হেসে ফেলতে বাধ্য হয়েছি আমি, আমাকে হাসতে দেখেই ও জিজ্ঞেস করলো - আমি কি ক্যান্টিনে আপনার সাথে এক কাপ চা খেতে পারি ?
আমি মাথা নেড়ে হ্যা বললাম।
চা খেতে খেতে হুট করে বললো " তোমার যে সাদা জামাটা আছে ওটা পরলে তোমাকে একদম পরীর মত লাগে । মনে হয় চারপাশ থেকে একগুচ্ছ শুভ্রতা স্বর্গের কোন পরীকে জড়িয়ে রেখেছে ।  প্রথমবার তোমাকে আমি ওই সাদা ড্রেসটাতেই দেখেছিলাম ।

আমি মনে মনে বলছিলাম " তোমার কিচ্ছু মনে নেই সাদিক । আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিলো এডমিশান টেস্টের দিন । প্রশ্ন দেখেই ভয়ে কিচ্ছু লিখতে পারছি না। তুমিই তখন বললে " এত ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই । আপনি নিশ্চয় পাস করবেন ।
সেই তখন থেকেই আমার চোখ দুটো তোমাকে সারাক্ষণ অনুসরণ করেছে । নিজের অজান্তে কখন মায়ায় আবদ্ধ হয়েছি ঠিক জানিনা । তুমি কবে কোন রঙের টি-শার্ট পরেছ , কবে একলা ক্যান্টিনে এসেছ । কখন কোন মেয়ের সাথে কথা বলেছ সব আমার ডায়রীতে আছে । এতগুলো দিন প্রতিক্ষার পর তুমি আমার দুয়ারে এলে  তোমাকে আমি কিছুতেই ফিরতে দেবো না ।

তারপর শুরু একসাথে পথ চলার । একসাথে ঘুরতে যাওয়া ফ্রেন্ড সার্কেলের দুষ্টামিতে গাল লাল করে ফেলা । প্রথমবার ভুলের ভান করে হাত ধরা । তারপর অভ্যস্ততার এক্সিউজ । কয়েকমাসের মাথায় হঠাৎ একদিন সাদিক হঠাৎ করেই বলে বসলো "চলো মুনা আমরা বিয়ে করে ফেলি । তোমাকে ফেলে বাসায় গেলে সারাক্ষণ শুন্য লাগে । একসাথে বাসায় ফিরবো এখন থেকে ।

কোনভাবে মাথা নেড়ে সায় দিলাম । সত্যি বলতে তখন শুধু ভেবেছি সাদিককে আমি ভালোবাসি , ভীষণ ভালোবাসী । আর কিচ্ছু মাথায় আসেনি, ভবিষ্যত পরিবার কোন কিছুই মাথায় আসেনি । আর ভেবেছি একসাথে থাকবো ।  এই আনন্দের কাছে বাকী সব তুচ্ছ লাগছিলো ।

তারপর কয়েকজন বন্ধু নিয়ে কাজী অফিসে গিয়ে দুজনে বিয়ে করে ফেললাম । সব শেষে সাদিকের হাত ধরে তার বাসায় । যা হবার তাই হলো -তার পরিবার কিছুতেই মেনে নিলো না আমাদের । সাদিকের হাত ধরে পথে নেমে এলাম । চন্দ্রাকে কল দিতেই জানলাম - সাদিকের পরিবার আমার বাসায় কল দিয়েছিলো ।

আরেকদফা ঝড় বয়ে গেছে ওখানেও, ফিরে যাওয়ার জায়গা নেই আর । রাতটা কোনভাবে এক হোটেলে কাটিয়ে পরেরদিন ছোট্ট একটা বাসা ভাড়া নিলাম আমরা । সাদিক পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে এক বন্ধুর ব্যাবসায় সাহায্য করতে লেগে গেল । আমিও বসে না থেকে পাড়ার দু একটা বাচ্চাকে পড়াতে শুরু করলাম ।

সাদিকের বন্ধুর ব্যাবসায় অল্প যা কিছু লাভ হয় সাথে আমার টিউশানীর কিছু টাকা মিলিয়ে  সংসার চালানোটা কষ্টকর নয় শুধু অসম্ভবের কাছাকাছি ছিলো । মাসের প্রথম কয়েকটা দিন পার হতেই হাত খালি , বাড়ি ভাড়া দিয়ে বাজার করার টাকা আর থাকছে না । এটা ওটা নিয়ে সাদিকের সাথে রোজ আমার ঝগড়া হতে লাগলো । তার পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার দোষে বারবার আমাকেই দায়ী করতে লাগলো । আমিও দায়ী করছি আমার জীবনটা নষ্ট করে দেয়ার জন্য । হুট করে শুনতে পেলাম আমাদের এক ফ্রেন্ড ওকে অন্য  মেয়ের সাথে রিকশায় যেতে দেখেছে । বেচে থাকার ইচ্ছেই নষ্ট হয়ে গেলো আমার ।

তিক্ততা সীমা ছাড়িয়ে গেলো । এক পর্যায়ে আমরা কেউ আর কাউকে সহ্য করতে পারছি না ।  বারবার মনে হতে লাগলো বিয়ে করার সিদ্ধান্তটাই ছিলো সবচেয়ে বড় ভুল জীবনের । ব্যাবসায় লসের পর লস দিতে দিতে ক্লান্ত  সাদিক একদিন বললো আমিই নাকি অপয়া, তার জীবনে এসে সব নষ্ট করে দিয়েছি ।  বাবাকে ফোন দিয়ে হাউমাউ করে কাঁদছি । বাবা খানিক্ষণ গম্ভীর থেকে জানতে চাইলেন ফিরে আসবি ?  

কাঁদতে কাঁদতে বললাম "বাবা আমাকে নিয়ে যাও । আমি আর পারছি না । সে রাতে সাদিক ফিরলো , রোজকার মতো দুজন দুদিকে ফিরে শুয়ে আছি । বললাম আমি কাল বাবার কাছে ফিরে যাচ্ছি, এবার তোমার জীবন তুমি গুছিয়ে নিয়ো। সাদিক কিচ্ছু বলেনি তবে কেপে কেপে উঠা পিঠ দেখে বুঝতে পারছিলাম - কাঁদছে ও ।
দুজন দুদিকে মুখ করে কাঁদছি । ছোট্ট রাতটা খনিকেই পুরিয়ে গেলো ।

সকালে উঠে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে গেলাম। ও একবারো বাধা দেয়নি । আমরা দুজনেই তখন জানতাম বাধা দিয়ে লাভ নেই, এভাবে হয় না । দিন যত যাবে এই পরিস্থিতিতে শুধু তিক্ততাই বাড়বে । মানুষের জীবন শুধু ভালোবাসা দিয়ে চলে না । ফিরে গেলাম বাবার কাছে , আবার কলেজে ভর্তি হলাম । কিন্তু দিন কাটেনা আর ।

চারদিকে অসীম শুন্যতা । দিনদিন বিষন্ন হয়ে পড়ছি আগের চেয়েও বেশী । নিজের নিঃশ্বাসকে বোঝা মনে হতে লাগলো । কিভাবে একবছর কেটে গেলো নিজেও জানিনা । সাদিকের ব্যাপারে কেউ আমার সাথে কথা বলে না। বাবাই নিষেধ করেছেন হয়তো । উড়ো উড়ো শুনতে পাই সাদিকের বন্ধুর ব্যাবসা খুব ভালো চলছে । সাদিক এখন প্রচুর টাকা আয় করে । একবার শুনলাম বিয়েও করেছে ।

ততদিনে আমার আর কিচ্ছুতে কিছু যায় আসেনা , নিজেকে জীবন্মৃত মনে হতো । পড়াশুনাও ছেড়ে দিয়েছি । কলেজ যেতে ভালো লাগে না আর ।  পাপের ভয়ে আত্মহত্যা  করিনি । শুধু চলছে জীবন নিস্তব্ধতায় ।

সেদিন সকাল থেকেই ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি হচ্ছিলো । রোজকার মতো জানালার গ্রীল ধরে শূন্য চোখে বাইরে তাকিয়ে আছি । বাবা ডাকলেন "মুনা বসার ঘরে একটু আয়তো মা । বসার ঘরে ঢুকেই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি - চকলেট কালারের ডাবল সোফাটায় সাদিক বসে আছে । কঠিন দৃষ্টিতে বাবার দিকে তাকালাম । বাবা হড়বড় করে বললেন তোরা দুজনে কথা বল - আমি আসছি ।

বাবা চলে যেতেই সাদিককে বললাম "তুমি চলে যাও - তোমার সাথে আমার কোন কথা থাকতে পারে না।
সাদিক অনুনয় করে বললো "মুনা প্লিজ একটা কথা শুনো আমার। আমি বেশীক্ষণ সময় নিবো না ।
পরিষ্কার বুঝতে পারছি মুখে বিদ্রুপের হাসি ফুটে উঠেছে আমার । সরাসরি চোখের দিকে তাকিয়ে জানতে চাইলাম "নিজের ওয়াইফকে জানিয়ে এসেছতো ? নাকি তার সাথেও প্রতারণা করার ইচ্ছে ?!
সাদিক অবাক হয়ে জানতে চাইলো "কিসের ওয়াইফ ?কার কথা বলছো !
আমিও এবার অবাক হয়ে জানতে চাইলাম "তুমি না বিয়ে করেছ ?
সাদিক আরো অবাক হয়ে উত্তর দিলো " কি সব বলছো ? আমার ওয়াইফতো তুমি । আমাদেরতো এখনো ডিভোর্স হয়নি । আমি আবার বিয়ে করবো কি করে !
উত্তরে কিছু বলার খুজে না পেয়ে চুপচাপ অন্যদিকে তাকিয়ে আছি । সাদিকই পায়ে পায়ে এগিয়ে এলো । আমার হাত ধরে বললো "প্লিজ ফিরে চলো মুনা । গত একবছর আমি একটা রাতও ঠিক করে ঘুমাতে পারিনি ।  সারাক্ষণ তোমাকে ভেবেছি । নিজেকে তৈরী করে কবে তোমার কাছে ফিরবো প্রতিদিন সে দিনের অপেক্ষা করেছি । তোমাকে ছাড়া আমি বাচতে পারবো না মুনা । আর অপেক্ষা করতে হলে আমি সত্যিই মরে যাবো ।

চোখের জল কিছুতেই বাধ মানলো না । সাদিককে ছাড়া আমারো যে কিছুতেই চলবেনা তা আমার চেয়ে ভালো আর কে জানবে ! দুহাতে আমার গাল ধরে ঠোটে ঠোট বসালো সাদিক । আমাদের দুজনের অশ্রু এক হয়ে মিশে যাচ্ছে  । অশ্রুজলে পবিত্র হোক এ ভালোবাসা । 
গোধুলীর আলোয় আকাশ যখন কুসুমি আবীরে রাঙিয়ে যায়- আমি তখন তোমার অপেক্ষায় থাকি ।
অপেক্ষায় থাকি অচেনা এক মুহূর্তের-
ডুবন্ত সূর্যের আলোয় তোমার ছায়া একটু একটু করে বাড়ছে।
তোমার চোখে কমলা সূর্যটা ধীরে ধীরে ডুবছে ।
প্রতিক্ষায় থাকি হঠাৎ-
অলীক কোন সুখের মত আমার ছায়াও পড়বে তোমার চোখে...
কমলা সূর্যের বুকে তোমার চোখে আমার চোখ থাকবে...
তুমি জানোনা-
তিন হাজার সাতশো সূর্যাস্ত আমার কেটেছে, তোমার চোখে নিজেকে খোজার শখে ...
তিন হাজার সাতশো রাত আমার জেগেছে তোমার উপস্থিতহীনতার কষ্টে ।
একেকটি সূর্যাস্ত আমার কেটেছে গাঢ় বিষাদে ...
তবুও আমার সময় কাটে অন্তহীন প্রতিক্ষার- তোমার চোখে আমার প্রতিচ্ছবি দেখার।
অন্ধকার ঘরে প্রজাপতি উড়ে । প্রজাপতিগুলো ফিসফিস করে বলে "তুমি না এলেই বা কি এসে যায় বলো"! অতীত কি বদলানো যায় ! অতীততো বদলায় না- শুধু রঙ গন্ধহীন অতীতের সব পৃষ্ঠাগুলো একেরপর এক উলটে যায়।
একবছর আগে ঠিক এই দিনটাতেই ছেলেটা মেয়েটাকে কল করেছিলো । ফোন হাতে হতভম্ব মেয়েটা জীবনে প্রথমবারের মতো নিজের হার্টবিট বন্ধ হওয়ার অনুভুতিটা আবিষ্কার করে। চারপাশের পৃথিবী থমকে যায়, চোখ বন্ধ করে মেয়েটা শুধু ছেলেটার কন্ঠে উচ্চারিত শব্দগুলোই অনুভব করতে থাকে। শুনতে পাওয়া বাক্যগুলো বারবার শুনতে চাওয়ার আশায় মিথ্যে করে "শুনতে পাচ্ছিনাতো" শব্দটা বলেই যায় ।
ছেলেটা বলা কথাগুলো আবারো আবারো বলেই যায় আর মেয়েটা চুপটি শুনতে থাকে । উত্তেজনায় হৃদয়টা খাচা থেকে বের হয়ে আসার ভয়েই বুঝি লাল বাটনটা টিপে দেয় মেয়েটা ।দু'হাতে মোবাইলটা বুকের কাছে মিশিয়ে দেয়ার ব্যর্থ প্রচেষ্টা । পৃথিবীর রঙগুলো বদলে যেতে থাকে মেয়েটার কাছে। মেয়েটার কাছে জীবনের অর্থ ছেলেটাই হয়ে উঠে । এতদিনের পুরনো পৃথিবীটা কেমন অচেনা হয়ে যায়, শুদ্ধ অশুদ্ধ সব ভুলে আয়নার ওপাশটায় পরিচিত পুরনো জগত রক্তের বন্ধন। আর এপাশটায় শুধু ছেলেটাকে জড়িয়ে মেয়েটা।
অনাকাঙ্ক্ষিত আবেগের প্রবল তোড়ে দিশেহারা মেয়েটা বিস্ফোরিত চোখে এতদিনের যত্নে গড়া জগতটাকে উলোট পালোট হয়ে যেতে দেখে। ভাঙ্গতে থাকে মেয়েটাও নিজের ভিতর অচেনা ঝড়ে। ভয়ে কাতর মেয়েটা ছেলেটার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় "এসো আমরা আয়নার ওপাশের জগতটা ছুয়ে দেই। মিলিয়ে দেই দু'জগতের মাঝখানের ব্যাবধানটুকু।" কিন্তু ছেলেটা মুখ ফিরিয়ে নেয় ।
সেদিন থেকেই মেয়েটা একটু একটু করে মরে যেতে থাকে। অদৃশ্য হতে থাকে অবাক কোন বিষাদে ।কাচের জগতটা ভেঙ্গে যায়। মিলিয়ে যায় মেয়েটা শূন্যে ।
তার ঠিক একবছর পর "মেয়েটা ফিরে আসে হঠাৎ করেই। আবারো আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েটা। অদ্ভুত ভাগ্যের খেলা- এবার আয়নার ওপাশটায় ছেলেটাকে দেখা যায়। মেয়েটা হাত বাড়ায় ছুয়ে দিতে কিন্তু কেন যেন ছুয়ে না দিয়ে ফিরিয়ে নেয়।তার বদলে ছুয়ে দেয় নিজের গাল, আঙুলের ডগায় অশ্রুজল।ক্ষণিকের জন্য ফিরে আসা মেয়েটা আবারো অদৃশ্য হয়ে যায়।
Some hides the Rainbow in them,
some hides the Light....
I hide the Darkness of mine,
which is so alive....
Sometimes it screams,
sometimes it flies,
Its a Big scary shadow in depths of nighttt...
It scares me,
drives people away from my side...
its hollow and empty
it screams for life....
I wait and wait
searching for a light...
and cling for hope
with all my might..
অন্ধকারে নিজের ছায়া দেখে চমকে উঠি, নিজের ভিতর লুকিয়ে রাখা আধারগুলো না ছায়া হয়ে সামনে এসে পড়ে। আলোর মুখোশ পরে লুকিয়ে রাখি নিজের অন্ধকার। মিথ্যে আলোর ভালোবাসা ছড়িয়ে বেড়াই অনর্গল। সেখানে হাত বাড়ালেই পুড়ে ছাই। কিছু ব্যাথার প্রলেপ ছাড়া বাকী সব ফিকে।
নিজের পুরো সত্তাকে অপরিচিত লাগে। খুব দ্রুত বদলে যাই। নিজের বদলে যাওয়ার সাথে নিজেই তাল রাখতে পারিনা। ভালোলাগা ভালোবাসা সব পুরাতন অনুভুতি, এখন দিন কাটে ভালো না লাগা নিয়েই। রাত নামে, রাত কাটে। ভবিষ্যতের আমিকে হাতড়ে বেড়াই। কিছু নেই ওখানে, নিরন্তর আধার।
মেঘ আর মেঘ
চারদিকে শুভ্র মেঘের মেলা
তার ঠিক নিচেই ছোট্ট একটা নদী।
নদীতে পা ডুবিয়ে বসে থাকে মেঘলা মেয়ে। নদীর চারপাশ জুড়ে সবুজ ঘাসের ঢেউ।
নদীর নীল জলে মেয়েটির মেঘ কালো চুলের ছায়া, লাল শাড়ি ছোট্ট ফুলের মতো ফুটে থাকে সবুজের মাঝে।
নদীর টীড় ঘেষে ছুটে যায় মায়া হরিণ, মুগ্ধ হয়ে দাড়িয়ে পড়ে এলোচুলের মেয়েটির দিকে তাকিয়ে। মেয়েটিও চোখ তুলে তাকায়, মেয়েটার বড় বড় কালো চোখে এক সমুদ্র জল। হরিণটা পায়ে পায়ে এগিয়ে যায়, মেয়েটাও অসীম আবেগে ছুয়ে দেয় মায়া হরিণের গাল।
ফোটা ফোটা অশ্রু বিন্দুয় শুভ্র মেঘগুলো শুভ্র থেকে শুভ্রতর হতে শুরু করে।
হরিণের গলা জড়িয়ে মেয়েটা বসে থাকে ফুসে উঠা আকাশের নিচে।
উত্থাল পাতাল ঝড় এসে ভাসিয়ে নেয় চারদিক।
ফিসফিস করে মেয়েটা বলে "আমি কখনোই আকাশটা চাইনি। আমার সারাজীবন আমি শুধু তোমার প্রতীক্ষা করেছি.....

Sunday, March 29, 2015

চৈত্র মাসের জোছনায় আমার ভাল লাগেনা কিছু
বেলী ফুটলে গাছে নেবো তোমার পিছু ...
আকাশ জুড়ে জমেছে মেঘ... বৃষ্টি কেন আসে না ?
যারে আমি ভালবাসি সে কেন বাসে না ... !

ভীষণ সরল দুটো প্রশ্ন , এই প্রশ্নগুলো আমাদের সবার জীবনেই অসংখ্য বার মাথায় এসেছে... কিন্তু এত্তসুন্দর করে প্রকাশ করতে এর আগে কখনো আমি শুনিনি ... এলোমেলো ছন্দ, ভুল কিছু শব্দ দিয়ে গানটা এত আবেগে গেয়েছে, খুব সহজেই হাহাকারটা অনুভব করা যায়, কাছে না পাওয়ার কষ্টটা একটু হলেও ছুঁয়ে যায় এই কণ্ঠে ... মুগ্ধ হয়ে শুনছি গানটা ... আমার বোধের জগত পুরোটাই নাড়িয়ে দিয়েছে এই গান ...

বৃষ্টি কাব্য -ঢাকা মেট্রো ।


জানালার বাইরে ভেসে গেছে দূরের আকাশ,
বিঁধে আছি সময়ের কাঁটাতারে,
বিঁধে আছো ছেঁড়া আকাশের মত তুমি..
তোমাকে এখন অপরিণত এক অচেনা স্মৃতি মনে হয়
তোমার জানালার বাইরে শূন্যে দূরের স্বপ্নঘর,
ঝুলে আছি নির্জনতায়,
মৃত্যু কি অনিকেত প্রান্তর?
সবুজ দীঘিতে বড় বড় পদ্ম , জলকন্যার চুলের ছোয়ায় হঠাৎ হঠাৎ গোলাপী আলো ছড়ায় ... জলকন্যা ভীষণ মায়ায় ছুঁয়ে দেয় একটি দুটি কুড়ি, সেই কুড়ি থেকে জন্ম নেয় ভালবাসা ... 
চারপাশে হাজার হাজার পদ্ম ফোটে, কিন্তু বিশাল সেই দীঘিতে একলা জলকন্যা মৃদুসুরে গান গাইতে গাইতে একটি দুটি করে গোলাপ বুনে... হয়তো দেখা পাবে জলকুমারের কোন এক ভালবাসার প্রহরে ...
জলরঙে আকা ছবিগুলো খুব অদ্ভুত হয় ... ছবিতে কষ্টের কোন ছোয়া না থাকলেও কেমন যেন জলরং কথাটা শুনতেই চোখভর্তি জলের কোন মায়াবতীর কথা মনে পড়ে ... সেই জলে মেশানো থাকে গাঢ় ভালবাসা ... 
নিজের জীবনের সাদা ক্যানভাসটায়, আমিই জলরঙ আমিই অকারণে কেঁদে ফেলা সেই তরুণী ... অথবা হঠাৎ হঠাৎ তার দেখায় বৈশাখী ঝড়ের পর সাত রঙে রংধনু হয়ে আকা জলছবি ...।
মধ্যরাতের চাঁদটা খুব অদ্ভুত হয় ... 
চাঁদ যত উপরে উঠে প্রিয় মানুষটাকে কাছে পাওয়ার ইচ্ছে ততটা বাড়তে থাকে .....
চাঁদ আর মেঘের লুকোচুরি খেলার মুহূর্তগুলোয় মেঘের ভাজে ভাজে লুকিয়ে থাকে একের পর এক চমক ... কেউ জানেনা এরপরের মুহূর্তে কি ঘটবে ... 

আমি জানিনা তবে এই সময়গুলোতে আমার মনে হয় ঘোরের মাঝে আমি আমার হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মানুষগুলোকে দেখতে পাই , ছুঁতে পারি এক মুহূর্তের জন্য ...
আবার মেঘের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে রূপালী আলোর চাঁদ ...
হারিয়ে যায় , হঠাৎ আছে আসা অপূর্ণ ভালবাসার পূর্ণ রূপটা ...
অনেকদিন ধরে না বলতে পারা সব ইচ্ছে গুলো একটু একটু দেয়াল হয়ে ঘিরছে আমায়, চারপাশটা ঘোলাটে লাল রঙে ঢেকে যাচ্ছে ... এলোমেলো স্বপ্নগুলো সব সাদা রঙের চেরির কুড়ি হয়ে ঝরছে ... আবারো হারাচ্ছি আমি আমার একলা ভুবনটায় ... 
ডুবছি আমার ধুসর ক্লান্তি আর ধোয়াটে সব স্মৃতির মাঝে , সময়গুলো ছুটছে পাগলা ঘোড়ার মত... বয়সের ভারটা বইতে আজকাল বড্ড কষ্ট কেন মনে হয় ! আবারো কিছু করা না করাতেই শেষ হয়ে গেল আরেকটা সাদাকালো বছর ... 
কিছুই করা হচ্ছেনা কিন্তু সময়গুলো শুধুই পুরিয়ে যাচ্ছে আমার ...
রাতজাগা দীর্ঘশ্বাস কেন যেন আমাকে একদমই মানায় না ।
তারপরও হঠাৎ হঠাৎ রাত্রিগুলো ভীষণ লম্বা হয়ে আমারও বিষণ্ণতার রঙে ধুসর হয়ে যায় ...
আমি আমার মত রাত জাগাপাখিগুলো খুজতে থাকি ...
একটু কি সময় হবে কারো দাড়াবার ?
আমি খুব বেশী বিরক্ত করবোনা সত্যি, শুধু একটুক্ষণ গল্প করবো ।
হবে কি কারো একটু সময় আমার পাশে হাসবার ?
অকারণ সব কথা শুনে আদরের বকা দেবার ?
হবে কি একটু খানি সময় কারো আমার পাশে থাকার ? 
তুমি আমার নক্ষত্র নও
তুমি আমার শেষ রাতের তারা

তুমি আমার প্রভাতের প্রথম কিরণ নও
তুমি আমার সারাদিনের রোদে ঝলমল সূর্যটা

তুমি আমার বৃষ্টি ফোটা নও
বৃষ্টির ক্ষনের আধার কালো মেঘ

তুমি আমার অলস সব


ছোট্ট কিছু স্বপ্ন সত্যি হওয়ার প্রতিক্ষায় কাটিয়ে দেয়া এই জীবনটাও মাঝে মাঝে খুব ছোট মনে হয়।
আর একটু , আর একটু অপেক্ষাতে হয়তো স্বপ্নটা সত্যি হয়ে ফিরতো , অনেক্ষানি তোমার মাঝে একটুখানি আমার ছায়া পড়তো... 
তোমার জন্য লিখা চিঠিগুলোতে সবসময় কিছু কথা বাকী থেকেই যায়, তোমাকে বলা সব হেয়ালী কথার কিছু অর্থহীন কিছু বাক্যের অর্থও মনের মাঝে থেকে যায় ... 
তোমাকে নিয়ে লিখা ভালবাসার কবিতাগুলো আমার এখনো অপূর্ণ থেকে যায় । 
তবুও তুমি আমার অনেক্ষানি কাছে, দুরের চেয়েও দূরে আবারো কাছের ভিতর অনেক্টুকু কাছে ...
অদ্ভুত কিছু ভালবাসায় আমি তোমাকে একেছি, 
সূর্যের লাল রঙটায় সাজিয়েছি ভাল লাগার সব মুহূর্ত । 
মাঝে মাঝে নীল তুলির রঙে আর সবুজের খেলায় বানিয়েছি রঙধনু , সেই রঙধনুতে এখনো লিখছি তোমাকে নিয়ে ছন্দহীন সব কবিতা । 
গড়ছি নতুন সব স্বপ্ন- 
আবারো পালাবো আমি তোমাকে নিয়ে অনেক দূরে কোথাও অচীন কোন মায়াপুরীতে।
ভালবাসবো তোমাকে ভীষণভাবে,একলাই আমার করে।
ভালবাসা হয়তো খুব সহজ, খুব শুদ্ধ ।
 স্নিগ্ধ আলোর চাঁদটার মত ।
অথবা  হয়তো খুব কঠিন, ভীষণ অন্ধকার ।
আলোহীন কোন কারাগারের মত। 

ভালবাসা হয়তো ভীষণ দুঃখী 
অথবা কিঞ্চিত সুখের প্রার্থনা ।
ভালবাসা হয়তো ক্ষনিক মায়া,
আবেগের কিছু প্রহর ।

 তারপরও ভালবাসা থাকুক ভালবাসা হয়ে,
ভালবাসা বাচুক আমার মাঝে- সবটুকু আদর নিয়ে।   
একটা সময় কি যে পাগল ছিলাম, তার অল্প কিছু কথায় আমার বুকের ভিতরটায় কাপন ধরতো । Jealous হয়ে ও যখন বলতো, কারো সাথে তুমি Flirt করলে খুন করে ফেলবো – অদ্ভুত অনুভুতিতে বুকের ভেতরটা ছেয়ে যেত ।
কি ভীষণ ভাললাগায় হার্টবিট বেড়ে যেত আমার, আমি আবারো নতুন করে প্রেমে পড়তাম। কয়বার যে প্রেমে পড়েছি আমি জানিনা, বারবার নিজেকে প্রশ্ন করেছি কেন ভালবাসি? প্রেমে পড়ার মত কি আছে!

আমার আদর্শ বরের কিছুইতো মিলছেনা! সারাজীবন যা চেয়েছি, তার সাথে ওর কোন মিল নেই । কোন প্রশ্নের জবাব ছিলনা, খুব অদ্ভুত ব্যাপার হতো ভাবতে গেলেই আরো বেশী প্রেমে পড়েছি। দূরে যাওয়ার সব চেষ্টায় ব্যারথ হয়ে আমি আবারো ফিরে এসেছি ।

নাহ আমি আবারো ভুল বলছি আসলে বুকের ভেতর কাপন ধরতো যে তা না, এখনো পুরনো মেসেজগুলো চোখে পড়লে ঠিক আগেরমতই আমার বুকের ভিতর কাঁপন ধরে । ভালবাসা নামের কালো ছায়া আবারো আঁকড়ে ধরে আমাকে চারপাশ থেকে ।
আমি সব ভুলে ওকে না পাওয়ার তীব্র হাহাকারে আকুল হয়ে কাঁদি, কিন্তু না এখনো ওর মাঝে আমি কোথাও নেই, ওর বিশাল জগতটার কোথাও আমার কোন অস্তিত্ব নেই । কিন্তু আমার সবটুকু জুড়ে এখনো শুধু ওর ছায়াই বাচে। এখনো হৃদয় নিংড়ানো সব ভালবাসা নিয়ে আমি ওর অপেক্ষায় থাকি , যদি কখনো ভুল করে ফিরে আসে ওর ফেলে যাওয়া পথটায় ।  


আমার সূর্যটা হয়তো আবার হাসবে তখন, অন্ধকার পৃথিবীটা আবার আলোয় ঝলমল করবে। তাই এখনো আমি থাকি তোমার প্রতিক্ষায়, আর একটিবার ফিরে এসো, নতুন করে তোমার প্রেমে পড়তে চাই আমি বারবার অথবা আবার ।  
গোধুলীর আলোয় একাকী খেলে
অবেলার ছায়াবীথি।
ঘরের কোণে ভাঙ্গা ফ্রেমে
অতীতের মায়াছবি।
তোমার কোন নিষ্পাপ ভুলে
বদলে যাওয়া কুৎসিত আমি।
বারবার হাহাকার মেখে জীবন ঝেড়ে
ফেলার খেয়ালে মাতলামী।

তবুও জীবন একপা দু’পা করে হাটে,
তোমার জন্য মলিন হয়ে কান্নার হাসি হাসে,
সুখগুলো সব ছিন্নভিন্ন-

আমি একাকী। 
জলপরী আর নীলপদ্মের গল্পটার শুরু কোন এক রিমঝিম বৃষ্টির দিনে, তারপর কিছু অর্থহীন আলাপচারীতাঃ 

- পরী তোমার চোখে এত মায়া কেন? 
- ভালবাসার অস্তিত্ব মায়াতেই যে তাই । 
- তাহলে ভালবাসার জন্ম কোথায় পরী ? 
- ভালবাসাতো এখানেই জন্ম নেয় , এখানেই বেচে থাকে পদ্ম । 

- নীল নাকি বিষাদের রঙ, তোমার নীলে কোন বিষাদ পদ্ম ? 
- ভালবাসার বিষাদগুলো আমার পাপড়ী ।
- ভালবাসায় কি বিষাদ থাকে পদ্ম ? ভালবাসাতো স্বপ্নময় কিছু সুখের নাম ।
- হারিয়ে যাওয়া ভালবাসা যে বিষাদেই বাচে পরী ।

- ভালবাসার শেষ যাত্রা কোথায় পরী?
- নীলপদ্ম হাতে দুটো মানুষের পদ্মবিনিময়টাইতো ভালবাসার শেষ ।
- তবে কেন কিছু নীল পদ্ম অকালেই ঝরে পড়ে পরী ?
- কিছু ভালবাসা যে হারিয়েই বেচে থাকে চিরকাল, অন্য কারো হয়ে- অন্য কারো মাঝে...
কিছুটা পথ দূরে থাকুক, 
কিছুটা হোক কাছের ... 
ভালবাসা বন্দী থাকুক, 
হঠাৎ হোক মুক্ত পাখী মেঘলা কোন সাঝের । 

বিশাল আকাশ, তারার মেলা
অপেক্ষার সব পথ চলা।
হারিয়ে যাক অন্ধকারে,
আবেগগুলো মুক্ত করে............
কেন তুমি আমাকে ভালবাসবে না? আমি কি করেছি বলো!
মেয়েটার আহত চোখের দিকে তাকিয়ে ছেলেটা ভীষণ বিব্রত বোধ করা ছাড়া আর কোন উত্তরই খুজে পায়না।

কেমন করে মেয়েটাকে সে বুঝাবে কোন কিছু না করলেও এই পৃিথবীতে সবাই সবাইকে ভালবাসতে পারেনা।

মেয়েটাও সব কিছুই বুঝে, তবুও আজকে সে অবুঝ হবে, আজকের দিনে এই একটা মানুষের কাছে সে ভীষণ ভীষণ অবুঝ হবে ।
একবুক হতাশা নিয়ে আবারো জানতে চাইবে "কেন? কেন তুমি আমায় ভালবাসবে না বলো?! 
প্রিয় আকাশ

তুমি ভাল থাকো, ভাল থেকো তুমি। তোমার ভাল থাকাতেই যে আমিও ভাল থাকার চেষ্টা করতে পারি।

আমিহীন তোমার সব আনন্দ হাসির কাব্য দেখে দেখে, আমিও সব দুঃখের দরজায় তালা দিয়ে যখন ডানা মেলার চেষ্টায় ব্যাস্ত তখনি কেন আবার তুমি একলা বিষাদের ঘরে!

তুমি জানোনা, যতবার তোমার একলা বিষাদের ছবিটা দেখি আমার বুকের ভিতরটা কেমন হুহু করে উঠে। আমারো বন্দী হতে ইচ্ছে করে তোমার সাথে সেই বিষাদের ঘরে। সুখের পৃিথবীটা যে ভীষণ অর্থ হীন লাগে তখন আমার।

তাই,তুমি ভাল থেকো। বেশ থেকো শুধু আনন্দগুলো নিয়ে। তাহলেই সব কষ্ট লুকিয়ে রেখে আমিও পারবো তোমার আমিহীন ভাল থাকার অপরাধটা ক্ষমা করতে।

ইতি
তোমার বুক থেকে ঝরে পড়া তারা

(বিঃদ্রঃ প্রিয় বিষাদ আনন্দ হও, আমি তোমায় ভালবাসী না যে...)



পাপ

আমার হাতের রেখায় পাপ,
নির্লোভ পাপে পৃথিবী একটু একটু করে মোহগ্রস্থ করার অকৃত্রিম বাসনায় সময় পুরিয়ে যায়।
কিন্তু আমার হাতের রেখায় থাকা পাপ কমেনা-  তিলতিল করে বাড়তেই থাকে ।
রেখা ছাড়িয়ে আঙুল ছুঁয়ে যায় এক পৃথিবী পাপ-
মুছে ফেলি সব পূন্য- আমার ছোয়াতেই পাপ !

আমার পাপে আধার হয়ে যায়, দূর থেকে দুরান্তর
জলের মতো গড়িয়ে আচ্ছন্ন করে ডুবন্ত পৃথিবীর শেষাংশ ..
আমিও অবাক হয়ে পাপ দেখি, নিজের পাপে হাতড়ে বেড়াই পূন্যের অবশেষ ,
আলো ছায়ার মত পাপ পুন্যের অবস্থান দেখি মুগ্ধ হয়ে-
পাশাপাশিই থাকে শুদ্ধ আর অশুদ্ধ।
কে না জানে পাপ ছাড়িয়ে হাত বাড়ালেই যে পূন্য ছুয়ে দেয়া যায় ! 

The crushing sound of my heart made me realize once again,I am not over it. I still love him... His pain is killing me,. How can i calm h...